দারিদ্র নিরসনের সেলাই মেশিন প্রশাসনীক কর্মকর্তার স্বজনের হাতে!

ফটিকছড়ি(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি ॥
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের অর্থায়নে দারিদ্র নিরসন ও নারী উন্নয়ন প্রকল্পের ৪ প্রকারের প্রশিক্ষণ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর স্ত্রী ও স্বজনরা পেয়েছে সেলাই মেশিন ও অন্যান্য সামগ্রী ! আশ্চার্য জনক হলেও সত্য এমন ঘটনাটি ঘটেছে প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদের যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে।

 

জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০১৩-২০১৪ সালে দারিদ্র নিরসন ও নারী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২ লাখ ৮৬ হাজার ৩ শত টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এতে সেলাই মেশিন প্রশিক্ষণে ২০ জন,ব্লক বাটিক প্রশিক্ষণে ২০ জন,মৌ চাষ প্রশিক্ষণে ২০ ও তেব ও বাশঁ সামগ্রীতে ২০ করে গত বছরের ২০ জুন থেকে ২৯ সেপ্টম্বর পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

 

এ সব প্রশিক্ষণে হাতে গোনা কয়েক জন দারিদ্র থাকলে ও সেলাই মেশিন প্রশিক্ষণে ২০ জনের মধ্যে ১০/১২ জন হল উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর স্ত্রী, এমন কি উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ আবদুল হান্নান আলমের স্ত্রী আয়েশা আক্তারও রয়েছে।

 

১৭ মে সকাল ১১ টায় উপজেলা পরিষদের মুক্তিযোদ্ধা শহীদ জহুরুল হল রুমে এ সব প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে সামগ্রী গুলো বিতরণ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পরে এ সব অনিয়মের বিষয়টি জানা জানি হলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

 

উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার মোঃ আকরাম হোসেন বলেন, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ আবদুল হান্নান আলম আমাকে ৭ বার ফোন করে বলেন, আমার স্ত্রীকে সেলাই মেশিন প্রশিক্ষণে পাঠানোর জন্য, ওনার পিড়াপিড়িতে প্রশিক্ষণে পাঠাই ছিলাম।

 
আরো জানা যায়, সেলাই মেশিন প্রশিক্ষনে অংশ নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের ২ জনের স্ত্রী, উপজেলা কৃষি অফিসের ২ জনের স্ত্রী এ ছাড়া হিসাব রক্ষন, খাদ্য, টি এন্ডটি সহ আরো অন্যান্য অফিসের কর্মকতা ও কর্মাচারীর স্ত্রী বা স্বজনরা এসব সেলাই মেশিন পেয়েছে।

 
এ বিষয়ে প্রশিক্ষণার্থীদের সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা চেয়ারম্যান এম তৌহিদুল আলম বাবু বলেন,প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের এসব সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এখন যখন শুনেছি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি । পরে তিনি ফোন করে বলেন, সেলাই মেশিন প্রশিক্ষনে অনিয়ম হয়েছে।

 

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেবুন নাহার মুক্তা বলেন, এ ধরনের অনিয়ম করা হয়ে থাকলে তা ঠিক হয়নি।

 

উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ আবদুল হান্নান আলম বলেন, কর্মকর্তা বা কর্মচারীর স্ত্রী বা স্বজন হিসেবে নয়, দেশের জনগন হিসেবে যারা প্রশিক্ষণ দিয়েছে তাদের কে সেলাই মেশিন ও অন্যান্য সামগ্রী দিয়েছি। এরা দারিদ্র কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরা দেশের জনগন তাই। কোন ইউনিয়নের কয়জনক সেলাই মেশিন দিয়েছেন প্রশ্ন করা হলে তার কোন জবার দিতে পারেননি।

রিপোর্ট :: আনোয়ার হোসেন ফরিদ, ফটিকছড়ি প্রতিনিধি

 

এ এস / জি এম এম / আর এস পি ::

 

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!