দামপাড়ার ‘জঙ্গি’ সাখাওয়াত যেভাবে সিরিয়ার যুদ্ধে জড়ান
তিন দেশ ঘুরে চট্টগ্রামে ফিরতেই পুলিশের হাতে ধরা
নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য সন্দেহে সিরিয়া ফেরত এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম পুলিশ। সাখাওয়াত আলী (৪০) নামে ওই ব্যক্তি ইন্দোনেশিয়াতেও ‘জঙ্গি তৎপরতার’ সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (১১ জুন) চট্টগ্রাম নগরীর দক্ষিণ খুলশী আবাসিক এলাকার কেন্দ্রীয় আহলে হাদিস জামে মসজিদ এলাকা থেকে সাখাওয়াতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক হয়ে সিরিয়া গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন সাখাওয়াত।
সিরিয়া ‘হায়াত তাহরীর আরশাম’ নামে একটি সংগঠনে থেকে ভারী অস্ত্রচালনার প্রশিক্ষণ নিয়ে সিরিয়ার ইদলিব শহরে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। পরে ইন্দোনেশিয়া গিয়েও জিহাদী কার্যক্রমে অংশ নেন তিনি। গত ২২ মার্চ তুরস্ক ও শ্রীলংকা ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া ঘুরে দেশে ফেরেন সাখাওয়াত।
সাখাওয়াত আলীর বাসা নগরীর দামপাড়া এমএম আলী রোড এলাকায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপপরিদর্শক (এসআই) রাছিব খান জানান, সাখাওয়াতের পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। তাকে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ১৯৯৭ সালে মাধ্যমিক পাস করা সাখাওয়াত উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর জওহরলাল নেহেরু প্রি ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে।
২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন কম্পিউটার ইনস্টিটিউটে কম্পিউটার বিষয়ক বিভিন্ন কোর্স করেন এবং ২০০৭ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। সেখান থেকে ২০১১ সালে দেশে ফিরে আসেন।
২০১২ সালে ভায়রা মো. আরিফ ও মামুনদের অনুপ্রেরণায় নিষিদ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলামে যুক্ত হন সাখাওয়াত। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগঠনের সদস্য সংগ্রহ ও প্রচারের কাজ করতেন তিনি। ওই সময় আনসার আল ইসলামের পলাতক নেতা ও সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত সৈয়দ জিয়াউল হকের সঙ্গেও সাখাওয়াতের দেখা হয়েছিল।
পরে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক গিয়ে সেখান থেকে অবৈধভাবে সিরিয়া ঢুকেছিলেন সাখাওয়াত। সেখানে ‘হায়াত তাহরীর আরশাম’ নামে একটি সংগঠনে থেকে ভারী অস্ত্রচালনার প্রশিক্ষণ নিয়ে সিরিয়ার ইদলিব শহরে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
সিরিয়া থেকে আবার তুরস্কে ফিরে যান সাখাওয়াত। তুরস্কে কিছু দিন থেকে সাখাওয়াত ২০১৯ ইন্দোনেশিয়াতে চলে যান। সেখানে স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি, সন্তানদের নিয়ে যান। চলতি বছরের ২২ মার্চ ইন্দোনেশিয়া থেকে দেশে ফিরেন সাখাওয়াত। এর ৩ মাসের মাথায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন তিনি।
এআরটি/সিপি