দরপত্র পাইয়ে দেওয়ার রমরমা ব্যবসা পতেঙ্গা আওয়ামী লীগ নেতার!

ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা তিনি। দলীয় এই পদবি ব্যবহার করে একেক সময়ে মন্ত্রী ও শীর্ষ নেতাদের সুপারিশ ও তদবির করে সেখনকার তেল সেক্টর ও সাইলোর অধিকাংশ দরপত্র কব্জায় নেন তিনি। গত বছর পদ্মা অয়েলের একটি কাজ পেয়ে যান বিনা টেন্ডারে। পরে কাজটি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দেওয়া হয় সেখানকার থানা বিএনপির শীর্ষ এক নেতাকে। ৪০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চৌধুরী আজাদের বিরুদ্ধে এমন সব অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

এছাড়াও কর্ণফুলী ইপিজেডে টেন্ডারবাজি ও মুসলিমাবাদ এলাকায় ইলিশ মাছের ‘ফার’ বাণিজ্য করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সূত্র বলছে, গত প্রায় ৮ মাস আগে উত্তর পতেঙ্গায় পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের অস্থায়ী দৈনিকভিত্তিক শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করেন। সেখানে এই লেবার সাপ্লাইয়ের কাজ এক মন্ত্রীর মাধ্যমে তদবির করে বিনা দরপত্রে ভাগিয়ে নেন জয়নাল আবেদীন চৌধুরী আজাদ। অথচ ওই কাজটি পরে সেখানকার থানা বিএনপি নেতা মোহাম্মদ মনছুরকে দিয়ে দেওয়া হয়। কাজটির জন্য তদবির করতে ২০ লাখ টাকা নিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের এই নেতা— এমন অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ কয়েকজন নেতা।

এছাড়া ২০১৯ সালের শুরুতে এই আওয়ামী লীগ নেতার সুপারিশে উত্তর পতেঙ্গা ইস্টার্ন রিফাইনারি লেবার সাপ্লাইয়ের দরপত্রটি ভাগিয়ে নেন থানা বিএনপির এই নেতা। সেখানেও তদবির ও বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে জয়নাল আবেদীন চৌধুরী আজাদের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই দিন আগে যৌথবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল। প্রায় ৩ মাস পর জামিনে মুক্ত হন তিনি।

স্থানীয়রা বলেন, এই ওয়ার্ডের একজন সাধারণ সম্পাদক হলেও নানা কারণে তার কিছু বির্তকিত কর্মকাণ্ডে সমালোচিত হন এই নেতা। নেতা-কর্মীদের কোন বিপদে তাকে পাওয়া যায় না। স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতা-কর্মীর সঙ্গে তার রয়েছে পারিবারিক সম্পর্ক।

জানতে চাইলে জয়নাল আবেদীন চৌধুরী আজাদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘১৪-১৫ বছর ধরে তেল সেক্টরে হ্যান্ডলিংয়ের কাজ করে আসছি। বিএনপি নেতা মনছুর করছেন পদ্মাসহ বেশ কয়েকটা কোম্পানিতে লেবার সাপ্লাইয়ের কাজ। তার সঙ্গে আমার কাজের কোন মিল নেই। তাকে কাজ পাইয়ের দেওয়ার অভিযোগ সঠিক না। আমার দলের কিছু লোকজন ঈর্ষান্বিত হয়ে দলের লোকজন ষড়যন্ত্র করছে।’

প্রসঙ্গত, জয়নাল আবেদীন চৌধুরী আজাদ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের আওয়ামী লীগের ওয়ার্ডের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম নেওয়ার পর জমাও দেন। ৮ মার্চ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।

মুআ/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!