থামছে না অবৈধ বালু উত্তোলন, হুমকিতে শঙ্খ নদীর বাঁধ

রাতের আঁধারে উত্তোলন, দিনে বিক্রি

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ে কয়েকজনের একটি সিন্ডিকেট বছরের পর বছর শঙ্খ নদের বিভিন্ন অংশ থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করছে গোদারঘোড়া বেড়িবাঁধ এলাকায়।

বালুভর্তি গাড়ি চলাচলে কাটা হচ্ছে কোটি টাকার বেড়িবাঁধ। এতে করে নতুন করে নির্মিত হওয়া বাঁধ এখন হুমকিতে। মাঝেমধ্যে উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালালেও প্রশাসনের লোকজন চলে যাওয়ার পর পুরোদমে ফিরে আসে আগের চিত্র।

বছরের পর বছর এভাবে চলে আসছে বালু উত্তোলন ও বিক্রি। স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চললেও চক্রটির বিরুদ্ধে কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে বলেন স্থানীয়রা।

কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে এভাবে বালু তোলায় হুমকির মুখে বেড়িবাঁধ ও চলাচলের সড়কগুলো। ধুলাবালিতে স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন যুবক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, দীর্ঘদিন ধরেই এভাবে বালু উঠিয়ে বিক্রি করছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। রাতের আধারে শঙ্খ নদের বিভিন্ন এলাকা থেকে বালু উত্তোলন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে বালু খালাসের কাজ।

তারা বলেন, বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পান না। তারা অনেকেই ইউপি নির্বাচনে ইউপি সদস্য প্রার্থীও ছিলো। কেউ কিছু বললে হুমকি দিয়ে বলে আমরা আওয়ামী লীগ করি। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এ ব্যবসা করছি। এভাবে চলতে থাকলে বর্ষায় নদী ভাঙন ভয়াবহ রূপ নেবে। এতে শঙ্খ নদীর ভরাচর ও গোদারঘোড়া এলাকা রক্ষা বাঁধ এবং চলাচলের সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আশা করি সরকার এসব বিষয়ে জরুরিভাবে ব্যবস্থা নিবেন।

থামছে না অবৈধ বালু উত্তোলন, হুমকিতে শঙ্খ নদীর বাঁধ 1

স্থানীয় জুঁইদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশেদুর রহমান খোকা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, বালু উত্তোলন ও বিক্রির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এসব রাজনৈতিক বিষয়। অনেকেই এর সাথে জড়িত আছে।

আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ের বিষয়টি জানতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে অনেক নামধারী নেতা আছে। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা অবৈধ বালু উত্তোলন, বিক্রিসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এছাড়াও অপরাধী যে দলের হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।

আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমি একাধিকবার অভিযান চালিয়ে ড্রেজারও জব্দ করে জেল জরিমানা করেছি। যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে পরিবেশ ও নির্মিত বেড়িবাঁধের ক্ষতি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!