তেঁতুল বিচির বাজার হঠাৎ সরগরম, খাতুনগঞ্জে ৯০ টন ঢুকল একদিনেই

তেঁতুল সহজলভ্য ও পরিচিত ফল হলেও, তেঁতুলের বিচি আমদানি করার কথা সচরাচর শোনা যায় না। দেশীয় উৎপাদনে বাজারের চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না বলে এখন তেঁতুলের বিচি আমদানি হচ্ছে। সম্প্রতি ভারত থেকে ৯০ টন তেঁতুলের বিচি নিয়ে তিনটি ট্রাক এলো চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ঢুকেছে তেঁতুলের বিচির এ চালান।

ভারত ছাড়াও চীন ভিয়েতনাম ব্রাজিল থেকেও আমদানি হচ্ছে তেঁতুলের বিচি। হঠাৎ দেশের বাজারের তেঁতুলের বিচির চাহিদা বাড়ায় রহস্যের সৃষ্টি হয় অনেকের কাছে। তবে, আমদানিকারকরা বলছেন অন্য কথা। ওষুধিগুণ সম্বলিত তেঁতুল বিচির বহুমাত্রিক ব্যবহার হয় বাংলাদেশে।

জানা গেছে, কাপড়ের রং তৈরির প্রধান উপকরণ হিসেবে হিসেবে ব্যবহার হয় তেঁতুলের বিচি। আর্য়ূবেধিক ওষুধের উপকরণ হিসেবে বহুযুগ আগে থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে তেঁতুল বিচি। বর্তমানে মশার কয়েলের উপকরণ হিসেবেও ব্যবহার বাড়ছে তেঁতুলের বিচির। ভারত থেকে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে তেঁতুলের বিচির এ চালানে ৩টি ট্রাকে ৯০ টন নিয়ে আসা হয়। এর কয়েকদিন আগে তেঁতুলের বিচির আরও দুটি চালান দেশে ঢুকেছে। ওইসব চালানের পণ্যগুলো সরাসরি খাতুনগঞ্জে আড়তে নিয়ে আসা হয় গত বুধবার (১০ মার্চ)। এছাড়াও কিছু পণ্য বিক্রি হয়ে যাওয়ায় সরাসরি পাঠিয়ে দেওয়া হয় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কারখানায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ তেঁতুলের বিচির বড় ক্রেতা ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও ভৈরবের মশার কয়েল ফ্যাক্টরিগুলো।

হিলি বন্দর দিয়ে ভারতের কলকাতার সুভাশ্রী ট্রেডিং থেকে বিচিগুলো চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ‘উজ্জ্বল শাহ’ নামের ব্যবসায়ী আমদানি করেছেন। চট্টগ্রামের এ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সত্যদাস বাবু বলেন, বছরের এসময়ে তেঁতুলের বিচির চাহিদা বেড়ে যায় বাংলাদেশে। এছাড়া এ সময়ে মশার উপদ্রুপও বাড়ে তাই কয়েল ফ্যাক্টরিগুলো তেঁতুলের বিচি আমদানি করেন।

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক শামীম শামছি বলছেন, তেঁতুল বিচি ইউনানি, আয়ুর্বেদ, হোমিও এবং অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়। শুষ্ক চোখের চিকিৎসায় যে ড্রপ তৈরি হয়, তাতে তেঁতুল বিচি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া পাকস্থলীর গোলযোগ, লিভার ও গল-ব্লাডারের সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে তেঁতুল বিচি।

এদিকে, হিলি স্থলবন্দরে যমুনা ট্রেডিং কর্পোরেশন নামের সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট এই চালান খালাসের দায়িত্বে ছিলেন। ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক মোহাম্মদ আলম বলেন, আয়ূুর্বেদিক, রং তৈরি ও মশার কয়েল বানানোর কাজে ব্যবহার হয় তেঁতুলের বিচি। তবে, প্রতিবছর এ সময়ে বিচির চাহিদা বেড়ে যায়।

তিনি জানান, প্রতি টন তেঁতুলের বিচি ২০০ মার্কিন ডলার মূল্যে আমদানি করা হচ্ছে, সেই মূল্যেই কাস্টমস কর্তৃপক্ষ শুল্কায়ন করছে। এতে করে টনপ্রতি ১ হাজার ৬০০ টাকা হারে শুল্ক প্রদান করতে হচ্ছে। এসব চালানের আরোপিত শুল্ক পরিশোধ করার পর আমদানিকারকের কাছে এসব তেঁতুলের বিচি সরবরাহ করা হবে সোমবার সকালে। আমদানি করা এসব তেঁতুলের বিচি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এসএ/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!