তৃতীয় স্ত্রীর সহায়তায় চতুর্থ স্ত্রীকে খুন করে সোহাইল, আশ্রয় দেয় দ্বিতীয় স্ত্রী

চট্টগ্রামে খুন করে পালিয়ে ছিলেন বাগেরহাটে

তৃতীয় স্ত্রীর সহায়তা নিয়ে চট্টগ্রামে চতুর্থ স্ত্রীকে খুন করে বাগেরহাটে দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে পালিয়ে ছিলেন স্বামী। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি, এক বছর পর হালিশহর থানা পুলিশের জালে ধরা পড়তে হলো ঘাতক স্বামী সোহাইল আহমেদকে (৪০)। নিজে চার বিয়ে করলেও চতুর্থ স্ত্রীর চালচলনে সন্দেহ হওয়ার কারণেই তাকে হত্যা করেন সোহাইল।

চট্টগ্রামের হালিশহর থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ১ বছর ৪ মাস পর ওই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনের দাবি করে এমন তথ্যই জানিয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পশ্চিম জোনে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান সিএমপির পশ্চিম বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার আবদুল ওয়ারীশ খান।

গত বছরের ২১ জুলাই হালিশহর থানার রহমানবাগ আবাসিক এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে পঁচতে শুরু করা এক অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় ওই নারীর স্বামীর জাতীয় পরিচয় পত্রের একটি ফটোকপি ছাড়া আর কোনো ক্লুই ছিল না পুলিশের হাতে।

দীর্ঘ এক বছর তদন্তের পর অজ্ঞাত সেই নারীর স্বামীকে শনাক্ত করে খুলনার বাগেরহাট থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সোহাইলকে গ্রেপ্তারের পর সেই নারীর পরিচয় পুলিশ জানতে পারে। সোহাইল জানিয়েছে, ভিকটিম নারীর নাম লাকী আক্তার পিংকি (২৫)। পিংকি সোহাইলের চতুর্থ স্ত্রী ছিল। পিংকির চালচলন নিয়ে সোহাইলের সন্দেহ ছিল। এসব নিয়ে প্রায়ই পিংকির সাথে ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকতো তার। এর জের ধরেই পিংকিকে হত্যা করে সে।

সংবাদ সম্মেলনে আবদুল ওয়ারীশ খান বলেন, ‘আসামি সোহাইলের চার বিয়ে। নিহত আফসানা তার চতুর্থ স্ত্রী। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সোহাইলের তৃতীয় স্ত্রী নাহিদা আক্তারের সম্পৃক্ততা মিলেছে। সোহাইল ও আফসানা একই গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। চাকরির সুবাদে আসামি সোহাইলের সঙ্গে আফসানার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে তারা বিয়ে করে হালিশহরের ভাড়া বাসায় উঠে।’

আবদুল ওয়ারিশ আরও বলেন, ‘ঘটনার দিন রাতে সোহাইল আফসানাকে ব্যাপক মারধর করেন। তার আগে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সোহাইল তার তৃতীয় স্ত্রী নাহিদাকে পতেঙ্গার বাসা থেকে ডেকে আনেন। এ ঘটনার সঙ্গে নাহিদাও হাত মেলান। ওই দিন রাতে ব্যাপক মারধরের এক পর্যায়ে আফসানা অজ্ঞান হয়ে যান। আফসানার মৃত্যু নিশ্চিত করতে সোহাইল আফসানার পরনের পায়জামা গলায় পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখেন। মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে তার লাশ রান্নাঘরে বিছানার চাদরে মুড়িয়ে রেখে বাগেরহাট পালিয়ে যান।’

এ ঘটনায় জড়িত সোহাইলকে বাগেরহাট ও নাহিদাকে পতেঙ্গা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ভিকটিম আফসানা দক্ষিণ পতেঙ্গার ডুরিয়া পাড়া এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের মেয়ে। তার পরিচয় শুধু মাত্র স্বামী সোহাইল আর নাহিদা জানতো। এদিকে আফসানার লাশ যখন পাওয়া যায় তখন সে লাশে পঁচন ধরে গিয়েছিল। ফলে সে সময় লাশের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল ওয়ারীশ খান।

এআরটি/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!