তিন বছর পর আবারও ফিফা বর্ষসেরা মেসি

ষষ্ঠবারের মতো এই খেতাব জিতলেন

তিন বছরের অপেক্ষার অবসান হলো গ্রহের অবিসংবাদিত সেরা ফুুুুটবলার লিওনেল মেসির। ফের সেরার মুকুট মাথায় পড়লেন তিনি। ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও ভার্জিল ভ্যান ডাইককে পেছনে ফেলে ২০১৯ সালের বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার ‘দ্য বেস্ট ফিফা মেন’স প্লেয়ার’ জিতেছেন বার্সেলোনার এই আর্জেন্টাইন তারকা। এই নিয়ে রেকর্ড ষষ্ঠবারের মতো ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন মেসি।

সোমবার রাতে মিলানে অপেরা হাউজ লা স্কালায় ‘দ্য বেস্ট ফিফা ফুটবল অ্যাওয়ার্ড’ অনুষ্ঠানে বর্ষসেরা ফুটবলারের পদক বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। তর্কসাপেক্ষে সময়ের সেরা তারকার হাতে পুরস্কার তুলে দেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো।

এর আগে উয়েফা বর্ষসেরার লড়াইয়ে মেসি ও রোনালদোকে পেছনে ফেলে পদক জেতেন লিভারপুলের ডাচ ডিফেন্ডার ভ্যান ডাইক। সেকারণে ফিফা বর্ষসেরার দৌড়েও তাকে এগিয়ে রাখা হচ্ছিল। সময়ের দুই সেরা তারকা মেসি ও রোনালদো এর আগে সমান পাঁচবার করে বর্ষসেরা নির্বাচিত হলেও এবারই প্রথম সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পান ভ্যান ডাইক। কিন্তু সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে মেসিই হয়েছেন বর্ষসেরা।

ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কারে রোনালদো-মেসির টানা দশ বছরের (২০০৮-১৭) রাজত্ব ভেঙে গেল ২০১৮ সালে ‘দ্য বেস্ট’ নির্বাচিত হয়েছিলেন ক্রোয়েশিয়া ও রিয়াল মাদ্রিদের মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচ। তিনি উয়েফার বর্ষসেরা পুরস্কার ও ব্যালন ডি’অরও জিতেছিলেন। তবে ২০১৬ সাল থেকে প্রচলন শুরু হওয়া ফিফার ‘দ্য বেস্ট’ পুরস্কারটি এবারই প্রথম হাতে তুললেন ৩২ বছর বয়সী মেসি। প্রথম দুবারের বিজয়ী ছিলেন রোনালদো।

গেল মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫১ ম্যাচ খেলে মেসি গোল করেন ৫০টি। কেবল লিগে ৩৬ গোল করায় জেতেন লা লিগা ও ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও ১২ গোল নিয়ে গোলদাতাদের তালিকায় শীর্ষে ছিলেন তিনি। ক্লাবের হয়ে জেতেন লিগ শিরোপা। কোপা আমেরিকায় তার দল আর্জেন্টিনা দখল করে তৃতীয় স্থান।

গত মৌসুমটা দারুণ কাটান রোনালদোও। জুভেন্টাসের হয়ে প্রথম মৌসুমেই ইতালিয়ান সিরি আ শিরোপার পাশাপাশি জেতেন উয়েফা সুপার কাপ। পর্তুগালের জার্সিতেও তিনি ছিলেন সফল। জেতেন দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শিরোপা। নতুন চালু হওয়া নেশন্স লিগের ফাইনালে হারান ভ্যান ডাইকের নেদারল্যান্ডসকে। পুরো মৌসুমে ৪৩ ম্যাচ খেলে রোনালদো গোল করেন ২৮টি।

লিভারপুলের জার্সিতে গেল মৌসুমটা দুর্দান্ত ছিল ডিফেন্ডার ভ্যান ডাইকেরও। চোখ ধাঁধানো পারফর্ম করে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। লিভারপুলকে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতাতে রাখেন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। জাতীয় দলের জার্সিতেও সফল তিনি। নেদারল্যান্ডসকে উয়েফা নেশন্স লিগের ফাইনালে ওঠানোর পেছনে অবদান ছিল তার।

কে কত ভোট পেলেন?
ভোটের র‌্যাংক বিচারে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে পুরস্কার জিতেছেন মেসি, ফন ডাইক পেয়েছেন ৩৮ পয়েন্ট ও রোনালদো পেয়েছেন ৩৬ পয়েন্ট।

মেসি-রোনালদো কে কাকে ভোট দিলেন?
ভোটাররা প্রত্যেকে সেরা হিসেবে তিনজনকে বেছে নিতে পারেন। প্রথম ভোট, দ্বিতীয় ভোট ও তৃতীয় ভোট আকারে। আর এই পদ্ধতিতে মেসি তার দ্বিতীয় ভোটটি রোনালদোকে দিলেও, রোনালদো তার তিন জনের তালিকায় মেসিকে রাখেননি।

মেসি তার প্রথম ভোটটি দিয়েছেন লিভারপুল ও সেনেগালের স্ট্রাইকার সাদিও মানেকে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদোকে দিয়েছেন দ্বিতীয় ভোট। আর বার্সা সতীর্থ ফ্রেঙ্কি দি ইয়ংকে দিয়েছেন তৃতীয় ভোট।

রোনালদো তার ক্লাব জুভেন্টাস সতীর্থ ম্যাথিয়াস দি লিটকে দিয়েছেন প্রথম ভোট, দি ইয়ংকে দ্বিতীয় ও পিএসজি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পেকে তৃতীয় ভোট দিয়েছেন।

বাংলাদেশের ভোটসমূহ:
জেমি ডে: লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, ভ্যান ডাইক
জামাল ভূঁইয়া: ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, লিওনেল মেসি, ইডেন হ্যাজার্ড।

শেষ ১২ বারের বিজয়ীরা:
ফিফা বর্ষসেরা
২০০৮ ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো
২০০৯ লিওনেল মেসি

একীভূত ফিফা ব্যালন ডি’অর
২০১০ লিওনেল মেসি
২০১১ লিওনেল মেসি
২০১২ লিওনেল মেসি
২০১৩ ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো
২০১৪ ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো
২০১৫ লিওনেল মেসি

দ্য বেস্ট ফিফা মেন’স প্লেয়ার
২০১৬ ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো
২০১৭ ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো
২০১৮ লুকা মদ্রিচ
২০১৯ লিওনেল মেসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!