তিন চাকার বেআইনি যান দাপিয়ে বেড়াচ্ছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক

অভিযানের নামে প্রশাসনের ‘নাটক’

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই মহাসড়কে অবাধে চলাচল করছে তিন চাকার বাহন সিএনজিচালিত অটোরিক্সা। মহাসড়কে দুর্ঘটনা রোধে সরকার তিন বছর আগে মহাসড়কে ঝুঁকিপূর্ণ তিন চাকার বাহন চলাচল নিষিদ্ধ করলেও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া অংশ যেন এর ব্যতিক্রম। অজানা কারণেই এসব গাড়ির ওপর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এসব যানবাহন চলাচলের ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনায় কেউ হচ্ছেন গুরুতর আহত, কেউ হচ্ছেন পঙ্গু, আবার কেউ হারাচ্ছে প্রাণ। প্রশাসন নামমাত্র অভিযান পরিচালনা করলেও পরিবর্তন হয় না কিছুই। মহাসড়কে অবাধে অটোরিক্সা চলাচল করায় দূরপাল্লার বাস চালকদের ক্ষোভ চরমে পৌঁছেছে।

বাসচালক সেলিম উদ্দীন জানান, ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে তিন চাকার বাহনের জন্য ভালোভাবে গাড়ি চালাতে পারি না। কোনো সিগন্যাল বোঝে না, যেখানে সেখানে ব্রেক চেপে বসে। যার ফলে দুর্ঘটনার জন্ম দেয় ছোট্ট তিন চাকার গাড়িগুলো। প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে অভিযানের নামে নাটক করে। সকলের সহযোগিতায় নিরাপদ মহাসড়ক চাই আমরা। এছাড়া এ সড়কে গাড়ি চালাতে অনেককে টাকা দিতে হয়। সেটা বলাও নিষেধ। মাসোহারা নিয়ে কথা বললে আমি এই সড়কে গাড়িও চালাতে পারবো না।’

সম্প্রতি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়ায় বাস ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে উপজেলার মাইজবিলা এলাকার মো. নুরুল কবিরের ছেলে মো. হাসান গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় তিনি। এ ঘটনায় একই এলাকার আহমদুর রহমানের ছেলে মো. শোয়াইব ও চকরিয়া পৌরসভার একরামুল হকের ছেলে মোহাম্মদ রাশেদ খান গুরুত্বর আহত হন। শুধু এই ঘটনা নয়, এ রকম অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটছে এসব অটোরিক্সার কারণে। আর কত দুর্ঘটনা ঘটে চট্টগ্রামের দোহাজারী হাইওয়ে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙ্গবে? এমনটাই প্রশ্ন স্থানীয়দের।

এ বিষয়ে লোহাগাড়ায় দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট মাহমুদ বলেন, ‘সবেমাত্র আমি নতুন এসেছি এই উপজেলায়। মহাসড়কের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এসব বিষয় আমাদের ইয়াছিন আরাফাত স্যারের (দোহাজারী হাইওয়ে থানার ওসি) কাছ থেকে জেনে নেবেন।’

সড়কে টোকেন বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখান থেকে কেউ অটোরিক্সার টোকেন দেয় না। যদি এ ধরনের টোকেন দিয়ে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ট্রাফিক ইন্সপেক্টর অ্যাডমিন নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ট্রাফিক রাত ১০টা পর্যন্ত থাকে। দিনে বা রাতে তিন চাকার অটোরিক্সাগুলোর বিষয়ে শীঘ্রই আমাদের সার্জেন্টদের সঙ্গে কথা বলে কঠোর ব্যবস্থা নেবো।’

জানতে চাইলে দোহাজারী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়াছিন আরাফাত বলেন, ‘মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচলে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। শুধুই তিন চাকার যানবাহন নয়, রাতে বা দিনে যাতে কোনো অবৈধ যানবাহন চলাচল করতে যেন না পারে সেদিকে কঠোর নজরদারিতে রয়েছে আমাদের পুলিশ সদস্যরা। যারা অবৈধ যানবাহন চালায় বা চালাতে সহযোগিতা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এএইচ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!