তাবিজ-কবচেও ‘করোনামুক্তি’র বাণিজ্য চলছে ভালোই!

করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের আতঙ্ক ও ভয়কে পুঁজি করে পাখা মেলেছে কুসংস্কার। এ সুযোগ হাতছাড়া করেনি তথাকথিত জাগতিক সকল সমস্যা সমাধানের আঞ্চলিক গুরু কিংবা বৈদ্য-হুজুর-কবিরাজরা। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকায় করোনা মুক্তির তাবিজ বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগে নাম এসেছে চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের কদমতলী এলাকার মান্নান বৈদ্য, ওয়াজু বৈদ্য, তপন বৈদ্য, পরিমল বৈদ্যসহ আরও ২০ জনের নাম। চাল পড়া, পানি পড়া, তেল পড়া দিয়ে হুজুররাও করছেন করোনার চিকিৎসা।

ভুক্তভোগীরা বলেন, এসব কবিরাজের কাছে গেলে প্রথমেই জ্বিন হাজিরের কথা বলে ১০০ টাকা নেওয়া হয়। এরপর করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি কিংবা ভবিষ্যতে করোনাভাইরাস না হওয়ার জন্য তাবিজের বদলে ১০০০-২০০০ টাকা আদায় করা হয়। কয়েকজন প্রবাসীর স্ত্রীর কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করেও আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, রাঙ্গুনিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষেরা কুসংস্কারে বিশ্বাস করে। সে সুযোগ নিয়ে উপজেলার চন্দ্রঘোনা কদমতলী, লালানগর, দক্ষিণ রাজানগর ও পারুয়া ইউনিয়নের ২০-২৫ জন বৈদ্য, কবিরাজ ও হুজুর করোনা মুক্তির তাবিজ বিক্রি করছেন।

এলাকাবাসী বলেন, রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা কদমতলী ইউনিয়নের জিয়া মার্কেট, খন্ডল পাড়া, ফকির পাড়া, নাথপাড়া, লালানগরের আলম শাহপাড়া পারুয়ার হাজানিহাট, সরফভাটাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় করোনা পরিস্থিতিকে পুঁজি করে কতিপয় বৈদ্য ও হুজুর সক্রিয় হয়ে উঠেছে। করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে কিংবা করোনা সংক্রমিত হবে না— এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাধারণ মানুষকে তাবিজ-কবজ দিচ্ছে। গ্রামের সহজ সরল মানুষ ও প্রবাসীর স্ত্রীদেরকে ফাঁদে ফেলে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা।

এ ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম বলেন, ‘এ ধরনের কিছু অভিযোগ আমরা শুনেছি। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। কেউ যদি করোনার চিকিৎসার নামে প্রতারণামূলক চিকিৎসা দিয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিচ আজগর বলেন, ‘করোনা চিকিৎসার নামে কেউ প্রতারণা কার্যক্রম চালাচ্ছে কি না জানা নেই। তবে কয়েকজন হুজুর সুস্থ থাকার জন্য তাবিজ দিচ্ছে বলে শুনেছি। তবে এই তাবিজ যদি করোনা মহামারি থেকে মুক্তির নামে দেওয়া হয় তাহলে তাদের অবশ্যই প্রতিরোধ করা হবে।’

এসএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!