ঢাকার সঙ্গে মিল আছে ষোলশহরের হামলা, রিমোট কন্ট্রোলে বিস্ফোরণ

চট্টগ্রামের ষোলশহর ২ নম্বর গেইট এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে গত বছর ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পুলিশের ওপর হামলার মিল রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ট্রাফিক বক্স থেকে উদ্ধার করা আলামত পরীক্ষা করে তদন্তকারী সংস্থা বলছে, স্থানীয়ভাবে তৈরি বোমার বিস্ফোরণই ঘটানো হয়েছে। তবে সেটি বক্সের ভেতর থেকে দূর নিয়ন্ত্রিত কোন যন্ত্রের মাধ্যমে (রিমোট কন্ট্রোল) বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত এর মোটিভ নিয়েও ধোয়াশায় রয়েছে পুলিশ।

ঢাকায় কয়েকবার এই ধরণের বিস্ফারণের ঘটনা ঘটলেও ষোলশহর দুই নম্বর গেইট এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বিস্ফোরণের ঘটনাটি চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো ঘটেছে। ফলে এর তদন্তে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে চট্টগ্রামের পুলিশও। এঘটনা তদন্ত করছে ঢাকা থেকে আসা অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের ১১ সদস্যের দল। এছাড়া স্থানীয়ভাবে সিএমপি, নগর গোয়েন্দা পুলিশ, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন, সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটও তদন্ত করছে।

সিএমপির উপ কমিশনার (উত্তর) বিজয় কুমার বসাক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি আলামত সংগ্রহ করেছে। একাধিক ইউনিট একযোগে এই ঘটনার তদন্ত করছে। এটি বিস্ফোরণ সেটি নো ডাউট। তবে কেন কীভাবে এবং কী কারণে তা নিশ্চিত হতে কয়েকদিন সময় লাগবে। আমরা এখনই হুট করে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নয়।’

তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেছেন, স্থানীয় উপকরণ দিয়েই এসব বোমা তৈরী করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে জিআই পাইপ ও মার্বেল জাতীয় পদার্থের টুকরা পাওয়া গেছে। তবে দিনের যে কোনও এক সময়ে পুলিশ বক্সের ভেতরেই বোমাটি রাখা হয়েছে। পরে দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতি ব্যবহার করে বক্সের ভেতরে আগে থেকে রাখা বোমাটি অন্য কোনো সার্কিটের সঙ্গে সংযুক্ত করে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।

গত বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্নস্থানে পুলিশ বক্স ও পুলিশের গাড়িতে অন্তত পাঁচদফা বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। সব বোমাই দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল বলে জানিয়েছিল পুলিশ। এসব হামলার ঘটনায় প্রথমে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস দায় স্বীকার করেছে বলে খবর প্রকাশ হলেও পরে পুলিশ জানিয়েছিল, ওই হামলা নব্য জেএমবির। তবে চট্টগ্রামের এই বিস্ফোরণের ঘটনায় গত ২৪ ঘণ্টায়ও কেউ দায় স্বীকার করেনি।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে নয়টার দিকে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ষোলশহর দুই নম্বর গেইট এলাকায় ট্রাফিক বক্সে বিস্ফোরণে কমপক্ষে পাঁচজন আহত হন। আহতরা হলেন- ট্রাফিক সার্জেন্ট আরাফাত, পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আতাউদ্দিন, স্থানীয় দুই যুবক জাহিদ বিন জাহাঙ্গীর ও মো. সুমন এবং আনুমানিক ১০ বছর বয়সী এক শিশু। আহতরা সকলেই আশংকামুক্ত বলে জানা গেছে।

বিস্ফোরণের ঘটনায় গত ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত কোনও মামলা দায়ের হয়নি। তবে কোনও ধরণের হামলার আশঙ্কায় নগরজুড়ে পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। সব থানা-ফাঁড়িসহ পুলিশের সকল স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম মোড়ে পুলিশি তল্লাশি করছে পুলিশ।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!