ডা. আকাশের আত্মহত্যা/ অভিযোগপত্রে মিতুর পরিবারের সঙ্গে কথিত বন্ধুও

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশের আত্মহত্যার পর প্ররোচনার মামলায় তার স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতুসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।

তানজিলা হক চৌধুরী মিতু ছাড়া অভিযোগপত্রভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন মিতুর মা শামীমা শেলী, বাবা আনিসুল হক চৌধুরী, ছোট বোন সানজিলা হক চৌধুরী আলিশা এবং মিতুর কথিত বন্ধু ডা. মাহবুবুল আলম। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ভারতীয় নাগরিক উত্তম প্যাটেল নামের অপর একজনকে মামলায় আসামি করা হলেও পরে তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি ডা. আকাশের মা জোবেদা খানম বাদি হয়ে দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে ছয়জনকে আসামি করে মামলাটি করেছিলেন। এটি তদন্ত করছেন চান্দগাঁও থানার এসআই আবদুল কাদের।

এই মামলায় নিম্ন আদালতে জামিন চেয়ে ব্যর্থ হন তানজিলা মিতু। পরে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। জামিন শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট তানজিলা হক চৌধুরী মিতুকে স্থায়ী জামিন দেন। এরপর ৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।

গত ৩১ জানুয়ারি সকালে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার একটি বাসায় মোস্তফা মোরশেদ আকাশ ইনজেকশনের মাধ্যমে নিজের শিরায় বিষ প্রয়োগ করে আত্মহত্যা করেন। তার আগে স্ত্রীর সঙ্গে একাধিক পুরুষের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে বাসা থেকে বেরিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান তানজিলা মিতু।

পরে স্ত্রীর কর্মকাণ্ড উল্লেখ করে স্বামী মোস্তফা মোরশেদ আকাশ ফেসবুকে পোস্ট দেন। তিনি লিখেন, ‘আমাদের দেশে তো ভালোবাসায় চিটিংয়ের শাস্তি নেই। তাই আমিই বিচার করলাম, আর আমি চির শান্তির পথ বেছে নিলাম।’

ওই দিন (৩১ জানুয়ারি) রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে নগরীর নন্দনকানন এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসা থেকে তানজিলা মিতুকে আটক করে।

আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মোস্তফা মোরশেদ আকাশের স্ত্রী, শ্যালিকা, দুই বন্ধুসহ ছয়জনকে আসামি করে ১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন ডা. আকাশের মা জোবেদা খানম। মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা মানসিক যন্ত্রণা ও উত্তেজনা সৃষ্টি করায় আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে মৃত্যুর মুখে পড়েন মোস্তফা মোরশেদ আকাশ। ২০০৯ সালে তানজিলা মিতুর সঙ্গে মোস্তফা মোরশেদের প্রেমের সম্পর্ক হয়। ২০১৬ সালে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকেন তানজিলা মিতু। কিন্তু বিয়ের আগে ও পরে অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখেন।

মোস্তফা মোরশেদ বিষয়টি জানার পর তার শ্বশুর-শাশুড়িকে জানান। তবে তারা শোধরানোর উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো মোস্তফা মোরশেদকে শাসাতে থাকেন। তানজিলার বোন সানজিলা যুক্তরাষ্ট্র থেকে নানাভাবে মোস্তফা মোরশেদকে হুমকি দিয়ে মানসিক যন্ত্রণা দিতে থাকেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!