ডবলমুরিংয়ে চাঁদা না দেওয়ায় দোকানিকে ছুরি মারল সন্ত্রাসীরা

চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং থানার দেওয়ানহাট রেলগেট এলাকায় এক যুবককে ছুরিকাঘাত করেছে সন্ত্রাসীরা। রাস্তায় দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে এবং পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ হামলা চালানো হয়।

আহত দোকানির নাম মো. পারভেজ। তিনি দেওয়ানহাটে রাস্তায় একটি দোকান করেন। চাঁদা না পেয়ে তার ওপর হামলা করেন জিয়াউল হক ফয়সাল (৩৬) ও তার সহযোগী মোক্তার। ফয়সাল ডবলমুরিং থানার ফজু মিয়ার বাড়ির আমিনুল হকের ছেলে।

শনিবার (১২ নভেম্বর) দুপুর ১টায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। আহত পারভেজকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে তিনি সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে থানায় মামলা করার জন্য গিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এই বিষয়ে আহত পারভেজ বলেন, ‘আমি মাদারবাড়িতে একটি সোয়েটার কারখানাতে কাজ করতাম। শীত আসার কারণে কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। তাই দেওয়ানহাট মোড়ে একটা ছোট দোকান দিই। এই এলাকায় দোকান দিতে গেলে ফয়সাল ও মোক্তারের অনুমতি লাগে। আমাকে দেখে তারা দোকান বসানোর অনুমতি দেয়নি। কারণ ওদের একটা মামলার সাক্ষী ছিলাম আমি। এজন্য দোকান বসাতে তারা চাঁদা দাবি করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চাঁদা না দিলে ফয়সাল ও মোক্তারের দলবল নিয়ে আমাকে ছুরিকাঘাত করে। এই সময় আমাকে লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য থানায় বসে আছি আমি। ওসি সাহেব থানায় বাইরে আছেন, আসলেই এই বিষয়ে মামলা করবো।’

জানা গেছে, ফয়সাল দেওয়ানহাট এলাকার ত্রাস হিসেবে পরিচিত। নগরীর নালাপাড়ায় আলোচিত সুদীপ্ত হত্যা মামলার প্রধান আসামি তিনি। তার অধীনে হামকা পার্টি থেকে শুরু করে ছিনতাইয়ের একাধিক গ্রুপ এলাকায় সক্রিয়। ফুটপাত ও সড়কের পাশে ভাসমান দোকান এবং বিভিন্ন পরিবহন স্ট্যান্ডকেন্দ্রিক মাসে লাখ লাখ টাকা চাঁদা তোলা হয় ফয়সালের নামে। বাদ যায়না পথের ভিক্ষুকও।

গত জুন মাসে চাঁদার জন্য এক ব্যক্তিকে মেরে রক্তাক্ত করে ফয়সাল ও তার সহযোগীরা। গত ১৭ এপ্রিল চাঁদা না পেয়ে দলবল নিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে আরেক ব্যবসায়ীকে৷ এর আগে ২৯ মার্চ দিবাগত রাতে পুলিশের সামনে দুই যুবককে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যাচেষ্টা করে ফয়সাল। তিনটি ঘটনাতেই ডবলমুরিং থানায় মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। কিন্তু তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

অভিযোগ রয়েছে, থানা পুলিশের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে ফয়সাল। চট্টগ্রাম আদালতে এক আসামিকে মারধরের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায়ও মামলা হয়।

এই বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক বলেন, ‘দুপুরে মারামারিতে আহত এক যুবককে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসা শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’

আরএ/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!