‘ঠিকানা জালিয়াতি’ করে সরকারি চাকরি পেলেন স্বাস্থ্য সহকারী

নিজের বাড়ি পটিয়ায়। নানার বাড়ি বোয়ালখালী। স্বাস্থ্য বিভাগের চাকরিতে পটিয়ার জন্য কোনো কোটা না থাকায় বোয়ালখালীকে নিজের ঠিকানা বানিয়ে চাকরিতে আবেদন করেন তিনি। বোয়ালখালী কোটায় চাকরিও হয় তার। এ জন্য তিনি আশ্রয় নেন জালিয়াতির। পটিয়ার ঠিকানায় থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র আবেদনের সাথে জমা না দিয়ে বোয়ালখালী আহলা করলডেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তথ্য গোপন করে নেওয়া সনদ জমা দেন চাকরির আবেদনপত্রে।

জালিয়াতি করে স্বাস্থ্য সহকারীর পদে চাকরি নেওয়া ব্যক্তির নাম প্রবীর মিত্র। তিনি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার দক্ষিণ ভুর্ষি অরুন মাস্টার বাড়ির অনিল কুমার মিত্রের সন্তান।

জানা গেছে, প্রায় সাড়ে ১০ বছর আগে নিজ এলাকায় ‘স্বাস্থ্য সহকারী’ পদ খালি না থাকায় বোয়ালখালী উপজেলার ঠিকানা দিয়ে চাকুরি নেন চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা প্রবীর মিত্র। ওই চাকরিতে গোপন রাখেন তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র। তিনি পটিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার সত্ত্বেও চেয়ারম্যান সনদে তার স্থায়ী ঠিকানা দেখান বোয়ালখালী। চাকরি নেন বোয়ালখালী উপজেলা কোটায়।

২০১০ সালের ২২ এপ্রিল ওয়ার্ডভিত্তিক স্বাস্থ্য সহকারী পদে বোয়ালখালী উপজেলার কোটায় চাকরি নেন প্রবীর মিত্র। ওই সময় নিজ উপজেলা পটিয়ায় ওই পদে কোটা না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দা দেখিয়ে বোয়ালখালী উপজেলার ১০ নম্বর আহলা করলডেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে সনদ নেন তিনি। তা জমা দিয়েই চাকরি নেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে কর্মরত আছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বর্তমান বোয়ালখালী পৌরসভার ‘স্বাস্থ্য সহকারী’ প্রবীর মিত্র ও তার বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রে স্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ আছে চট্টগ্রামের পটিয়ার দক্ষিণ ভুর্ষি অরুন মাস্টারের বাড়ি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রবীর মিত্র বলেন, ‘আমার পড়াশুনা বোয়ালখালীতে। ওখানে আমার নানার বাড়ি। আমার বেড়ে ওঠাসহ সব কিছু নানার বাড়িতে। তবে আমি আমার ভোটার আইডি কার্ড ও বাবার ভোটার আইডি করেছি পটিয়ায়। চাকরি নেওয়ার সময় আমি ভোটার হয়নি। তাই বোয়ালখালীর ঠিকানা ব্যবহার করেছি।’

বোয়ালখালী উপজেলার ১০ নম্বর আহলা করলডেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হামিদুল হক মান্নান বলেন, ‘প্রবীর মিত্র বড় হয়েছে নানান বাড়িতে। কিন্তু পটিয়ায় আবার ভোটারও হয়। কিন্তু আমার সনদ দেখিয়ে কোটাভিত্তিক স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকুরি নেওয়ার বিষয়টি আমি জানি না। যেহেতু তার নানার বাড়ি এখানে (বোয়ালখালী) তাই তাকে একটি সনদ দেওয়া হয়েছে। এখন কোন কাজে এ সনদের ব্যবহার করেছেন তাতো আর বলতে পারবো না।’

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর আগের বিষয়টি। আমি নতুন দায়িত্বে আছি। এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়া হবে।’

মুআ/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!