ঠিকানা চট্টগ্রামের, জন্মসনদ এল রংপুর থেকে

চট্টগ্রাম ও বান্দরবানসহ দেশের কয়েকটি জেলার শতাধিক নারী-পুরুষকে রংপুরের পীরগঞ্জের কাবিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মসনদ দেওয়া হয়েছে। পীরগঞ্জের ঠিকানা দিয়ে অনলাইনে আবেদন করে জন্মসনদ দেওয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা মামলায় ইউনিয়নটির উদ্যোক্তা নুর আলম ইসলাম হাবিবকে (২২) পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

জানা গেছে, পীরগঞ্জের কাবিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করেন নুর আলম ইসলাম হাবিব। তিনি সম্প্রতি কাবিলপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা দেখিয়ে অনলাইনে তথ্যাদি পূরণ করে তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে সচিব ও চেয়ারম্যানের ‘জন্ম ও মৃত্যু আইডি’র পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে শতাধিক নারী-পুরুষকে জন্মসনদ দিয়েছেন। জন্মসনদগুলো পিডিএফ ফাইল করে একটি চক্রের কাছে সরবরাহ করেছে।

এতে দেখা গেছে, ওই জন্মসনদে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাজশাহী, কুমিল্লা, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলা উল্লেখ করা হয়েছে।

বিধি অনুযায়ী আবেদনগুলো অনলাইনের মাধ্যমে উদ্যোক্তার কাছ থেকে ইউনিয়ন সচিব এবং চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়। চেয়ারম্যান অনুমোদন দেওয়ার পর সচিবের কাছ থেকে পুনরায় জন্মসনদগুলো উদ্যোক্তার কাছে অনলাইনের মাধ্যমে এলে সেগুলো প্রিন্ট করে সচিব ও চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর করে আবেদনকারীকে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই উদ্যোক্তা জন্মসনদগুলো পিডিএফ ফাইল করে চক্রটির কাছে পাঠিয়েছে।

অনলাইনে আবেদনগুলোতে দেখা গেছে, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের মো. ইনকিয়াদ ইসলাম, বান্দরবানের নাইক্ষ্যাংছড়ির ইমাম হোসেন, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার তানজিলা আফরিন জেরিন, লক্ষ্মীপুরের ভবানীগঞ্জের রহিম জন্মসনদের জন্য স্থায়ী ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। তারা সবাই পীরগঞ্জের কাবিলপুর ইউনিয়নের ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। তবে কোনো গ্রাম নেই। এভাবেই শতাধিক জন্মসনদ দেওয়া হয়েছে।

ওই ঘটনায় কাবিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আমজাদ হোসেন ওই উদ্যোক্তাকে একমাত্র আসামি করে গত ৩ মার্চ রাতে পীরগঞ্জ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। ওই রাতেই পুলিশ ওই উদ্যোক্তাকে গ্রেফতার করে।

কাবিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আমজাদ হোসেন বলেন, আমি ১ মার্চ রাতে ইউনিয়ন পরিষদের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখি, উদ্যোক্তা হাবিব পাসওয়ার্ড লগইন করে শতাধিক জন্মসনদ দিয়েছে। এ ঘটনায় তাকে একমাত্র আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছি।

ইউনিয়নটির চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি জানান, আমার এবং সচিবের জন্ম ও মৃত্যু আইডির পাসওয়ার্ড চুরি করে ওই উদ্যোক্তা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলে- ম্যাসেঞ্জার গ্রুপের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তথ্যগুলো পেয়ে বর্তমান ঠিকানায় কাবিলপুর দিয়ে অনলাইনে আবেদন করে। এভাবে ১৫০টির মতো জন্মসনদ অনলাইনে আবেদন করে পিডিএফ ফাইল করে ওই গ্রুপে দিয়েছে। সে প্রতিটিতে ১ হাজার ২০০ টাকা করে পেয়েছে বলে জানিয়েছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!