ঠিকাদারকে ঋণ পাইয়ে দিয়ে তদন্তের মুখে চসিকের প্রকৌশলী

ঠিকাদারকে ব্যাংক থেকে ঋণ পাইয়ে দিতে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের এক প্রকৌশলী। ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে এই কাণ্ড করেছেন চুক্তিভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মঞ্জুরুল হক তালুকদার। এই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। গত ২১ আগস্ট চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রশাসনের স্থানীয় সরকার পরিচালকে কাছে উপসচিব মো. এমদাদুল হক স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত পত্রটি আসে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য মনোনীত ঠিকাদাররা কার্যাদেশের বিপরীতে ব্যাংক ঋণ সুবিধা পেয়ে থাকেন। তবে চসিক থেকে ঠিকাদারকে অনুমোদন নিতে হয়। এই ক্ষেত্রে দাপ্তরিক সব প্রক্রিয়া শেষে মেয়র ফাইলের চূড়ান্ত অনুমোদন দেন। এরপর প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা অনুমোদনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে জানিয়ে দেন। এছাড়া কাজ শেষে ঠিকাদার যে বিল পাবেন তা ব্যাংক বরাবর জমা করে হিসাব বিভাগ। তবে এ নিয়ম না মেনেই একজন ঠিকাদারকে ব্যাংক ঋণ সুবিধা পাইয়ে দিতে চিঠি দিয়েছেন সংস্থাটির নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মঞ্জুরুল হক তালুকদার। ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর ‘মো. মাঈন উদ্দিন (বাশী)’ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে তিনি এ চিঠি দেন।

নগরীর মহেশখালে ৪ কিলোমিটার এলাকায় রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ এবং আরসিসি সড়ক নির্মাণ কাজের জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে ৩৭ কোটি ৫০ লাখ ২১ হাজার ১৯০ টাকায় কার্যাদেশ দেয় চসিক। মূলত এ কার্যাদেশের বিপরীতেই চিঠি দেন প্রকৌশলী মঞ্জুরুল হক তালুকদার। তখন তিনি প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে স্টাফ অফিসার ছিলেন। তার দেওয়া চিঠির ভিত্তিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড কুমিল্লা শাখা ১২ কোটি ২৬ লাখ ৯১ হাজার ৭৫৭ টাকা ঋণ প্রদান করে। ঠিকাদারের সাথে যোগসাজশে এখতিয়ার বর্হিভূত এই চিঠি দেন ওই প্রকৌশলী। মন্ত্রণালয়ের কাছে ১২ পাতার এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে রোববার (২৫ আগস্ট) রাতে প্রকৌশলী মঞ্জুরুল হক তালুকদারের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও তা বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লে.কর্ণেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। এছাড়া মন্ত্রণালয় থেকে তদন্তের জন্য যে চিঠি আসার কথা বলছেন সেটাও আমার হাতে এসে পৌঁছেনি।’

উল্লেখ্য. মো মঞ্জুরুল হক তালুকদার ২০১৩ সালের ২৫ এপ্রিল চুক্তিভিত্তিতে সম্পূর্ণ অস্থায়ীভাবে সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) হিসেবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে নিয়োগ পান। পরে তাকে চলতি বছরের ৩০ মে নির্বাহী প্রকৌশলীর অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এডি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!