ট্রাফিকের ‘ধীরে চলো’ চট্টগ্রামে, সড়কের নতুন আইনে ‘ভয়’

নতুন সড়ক আইন প্রয়োগের দ্বিতীয় দিনেও চট্টগ্রামে আইনটি প্রয়োগ করেনি ট্রাফিক বিভাগ। এর আগে জরিমানার টাকার অঙ্কসহ স্লিপ না থাকায় প্রথমদিন আইনটি প্রয়োগ করা যায়নি বলে জানিয়েছিলেন সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বশীলরা। তখন মঙ্গলবার থেকে আইনটি প্রয়োগ করার কথাও জানিয়েছিলেন তারা।

তবে জরিমানার টাকার অঙ্কসহ নতুন স্লিপ ছাপানো হলেও প্রয়োগ হয়নি আইনটি। এর কারণ হিসেবে ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আরও সময় নেয়ার কথা। এবার কারণ হিসেবে ২ ডিসেম্বর থেকে আইন প্রয়োগ শুরু করা শহরগুলোতে একদিনের মাথায় তা থেমে যাওয়ায়, আরেকটু দেখে শুনে এগুনোর কথা ভাবছেন তারা।

মঙ্গলবার জিইসি, দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ, মুরাদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সারেজমিনে গিয়ে নতুন সড়ক আইন বাস্তবায়নে ট্রাফিক পুলিশের কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের উপ কমিশনার (উত্তর) আমির জাফর বলেন, আইনটি আমরা আজও কার্যকর করতে পারিনি। ঢাকায়ও বোধহয় এটা আপাতত কার্যকর হচ্ছে না। পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের দাবিগুলো নিয়ে মন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। এজন্য আমরা আরও দুয়েকটা দিন অপেক্ষা করছি।

যে স্লিপ না থাকায় প্রথম দিনে আইন কার্যকর করা যায়নি সে স্লিপগুলো এসেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্লিপ আমরা ছেপেছি। কিন্তু কাউকে দেইনি। যেদিন থেকে মামলা করার সিদ্ধান্ত হবে, সেদিন থেকে বিলি করবো। তবে নতুন আইন কার্যকর করার সবধরনের প্রস্তুতি আছে। সিদ্ধান্ত এলেই তা বাস্তবায়ন করবো।

সিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) এসএম মোস্তাক আহমেদ বলেন, আইন কার্যকরের কোন অফিসিয়াল নির্দেশনা আমরা এখনো পাইনি। এখনো সচেতনতা কার্যক্রম চালাচ্ছি।

বাংলাদেশে যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. মোজাম্মেল হক বলেন, দীর্ঘ একমাস সময় পেরিয়ে যাবার পরও যদি যথাযথভাবে আইনের প্রয়োগ করা না যায়, তাহলে নতুন আইন সম্পর্কে মানুষের মনে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হতে পারে।

উল্লেখ্য, ১ নভেম্বর নতুন সড়ক আইন কার্যকর হলেও মালিক শ্রমিকদের বাধা ও কিছু ধারার বিষয়ে আপত্তি নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। ২০ নভেম্বর পণ্য পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ধর্মঘট হলে পুরো দেশের সড়ক প্রায় গণপরিবহন শূন্য হয়ে পড়ে। আইনের ৬৪ ধারার মধ্যে ৭৪, ৭৫, ৭৬, ৭৭, ৮৪, ৮৬, ৯০, ৯৮, ১০৫সহ মোট ৯ ধারার বিষয়ে আপত্তি তোলে মালিক শ্রমিকেরা। পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে ৯ দফা দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। বৈঠকে লাইসেন্স সংক্রান্ত ৬৬ ধারা আগামী জুন পর্যন্ত প্রয়োগ করা না করার বিষয়েও দাবি ওঠে।

এদিকে আইন কার্যকরের পর ঢাকায় জরিমানা প্রয়োগ শুরু হলেও চট্টগ্রামে এখনো পর্যন্ত নতুন আইনে কোনো জরিমানা হয়নি। দীর্ঘ ১ মাস ট্রাফিক বিভাগ নতুন আইন সম্পর্কে পরিবহনের চালক, হেলপার, যাত্রী, পথচারীদের জন্য কর্মশালা, প্রচারপত্রবিলি, সিগন্যাল বাতি কার্যকর, ট্রাফিক পয়েন্ট চিহ্নিত করাসহ নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করার মাধ্যমে গণসচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে চট্টগ্রাম ট্রাফিক বিভাগ।

এআরটি/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!