টেকনাফে গ্রেপ্তারের পরই ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আওয়ামী লীগ নেতা নিহত

কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মুফিদ আলম (৩৯) নিহত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।

শনিবার (১৩ জুলাই) দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াপাড়া বালিকা মাদ্রাসার পেছনে নাফ নদীর পাশে এ ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়। ঘটনাস্থল থেকে দুইটি আগ্নেয়াস্ত্র, ১০ রাউন্ড শর্টগানের তাজা কার্তুজ ও ৫ হাজার ইয়াবা উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত মুফিদ নয়াপাড়া গ্রামের মৃত নজির আহমদের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, ‘নিহত মুফিদ একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্র আইনে অন্তত ছয়টি মামলা রয়েছে। মাদক উদ্ধার অভিযানের অংশ হিসেবে শনিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে নয়াপাড়া বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে মুফিদ জানায়, ইয়াবার একটি বড় চালান নয়াপাড়া বালিকা মাদ্রাসার পিছনে নাফ নদীর পাশে মজুদ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওসির নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তার সহযোগী অস্ত্রধারী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে থাকে। এতে ঘটনাস্থলে এএসআই অহিদ উল্লাহ, কনস্টেবল রুবেল মিয়া ও মনির হোসেন আহত হয়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে পুলিশও পাল্টা ৩৮ রাউন্ট গুলি চালায়। এক পর্যায়ে আটক মুফিদ আলম গুলিবিদ্ধ হয়। অস্ত্রধারী মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি করতে করতে দ্রুত পালিয়ে যায়।’

তিনি জানান, ‘ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি করে বিক্ষিপ্ত ভাবে ফেলে যাওয়া দুটি এলজি, ১০ রাউন্ড শর্টগানের তাজা কার্তুজ এবং ৫ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে গুরুতর আহত গুলিবিদ্ধ মুফিদ আলম টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠান। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বর্তমানে মৃতদেহ মর্গে রয়েছে।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা জানান, মুফিদ আলম একজন আওয়ামী লীগের সক্রিয় নেতা ছিলেন। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ সভাপতির পদে ছিলেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। সাবেক হোয়াইক্যং ইউনিয়ন দক্ষিণ শাখা আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহ্বায়কও ছিলেন তিনি। তার তিন স্ত্রী ও পাঁচ ছেলে মেয়ে রয়েছে।

এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী পদ-পদবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ইয়াবা ব্যাপারি বিএনপি-জামায়াত সব দলের মধ্যে রয়েছে। তবে কোনো ব্যক্তি অপরাধ করলে তার দায়ভার দল নেবে না।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!