টুং টাং শব্দে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে কামারপল্লীতে

করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল কামারপল্লী। কোরবানের ঈদকে ঘিরে কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়ার কামারপল্লীগুলো টুং টাং শব্দে আবার মুখরিত হয়ে উঠেছে। কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছে কামাররা। পশু জবাই ও মাংস কাটার সরঞ্জামাদি তৈরি ও পুরাতন দা, ছুরি, বঁটি, চাপাতি শান দেয়ার ধুম পড়েছে।

সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চকরিয়া পৌরশহরের সবগুলো কামারের দোকানে বিদ্যুৎচালিত শান মেশিন ব্যবহার করে অল্প সময়ে অধিক কাজ করছেন কামাররা। পাশাপাশি আগুনের বাদির মাধ্যমে লোহা পেটাচ্ছেন সহকারীরা। এছাড়া পাড়া-মহল্লায় মৌসুম ভিত্তিক কামাররা রেত (শান দেয়ার যন্ত্র) দিয়ে দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতি ও অন্যান্য সরঞ্জাম শান দিচ্ছেন।

চকরিয়া পৌরশহরের বাসিন্দা ও কামারের দোকনের মালিক অনিল কর্মকার জানান, করোনা সংক্রমণের পর থেকে দীর্ঘদিন দোকান বন্ধ ছিল। তখন আয় রোজগার বন্ধ থাকায় কষ্টে দিন গেছে। কোরবানির ঈদকে ঘিরে আবারও দোকান চালু করেছি। কোরবানি ঈদে হাজার হাজার গরু-ছাগল কোরবানি হয়ে থাকে। পশু জবাই থেকে শুরু করে কোরবানির মাংস রান্নার জন্য প্রস্ততি পর্যন্ত দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতি ও অন্যান্য সরঞ্জামাদির প্রয়োজন হয়। বছরের অন্যান্য সময় কাজ কম থাকলেও এ সময়ে আমরা কর্মব্যস্ত হয়ে থাকি।

পেকুয়ার সদরের বাসিন্দা নিতাই কর্মকার জানান, সারাবছর কষ্ট করে চলতে হয়। ঈদ এলেই আমাদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায়। চাঁদ রাত পর্যন্ত নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে। একসময় এ পেশায় অনেক লোক ছিল। কিন্তু এখন কাজের লোকও মিলছে না। বাপ-দাদার ব্যবসা কোন রকম কষ্টে টিকিয়ে রেখেছি। আমাদের ছেলেরা এখন এ পেশায় আসতে চায় না।

কাকারা ইউনিয়নের বাসিন্দা দুলাল কর্মকার বলেন, করোনার কারণে ক্রেতা কমে গেছে। আর্থিক অভাবের কারণে অধিকাংশ লোকজন কোরবান করতে পারছে না। আর কয়েকদিন সময় আছে, দেখা যাক কি হয়।

জানা গেছে, একটি দা আকার ও লোহা ভেদে ২০০-৫০০ টাকা, ছুরি ৫০-৪০০ টাকা, হাঁড় কাটার চাপাতি একেকটি ৩০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং পুরনো যন্ত্রপাতি মেরামত করতে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন কামাররা।

কয়েকজন ক্রেতা জানান, সব কিছুর দাম একটু বেশি নিচ্ছে। তারপরও কোরবানির প্রয়োজনে দা-ছুরি না নিয়ে উপায় নেই।

আবার অনেকে বলেছেন, দীর্ঘদিন তাদের ব্যবসাও বন্ধ ছিল। সবমিলিয়ে দাম একটু বাড়তি নিলেও আপত্তি নেই।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!