টিকার নিবন্ধনে গিয়ে চট্টগ্রামের বিদেশগামীদের পদে পদে ভোগান্তি

অ্যাপ খোলে না ঝামেলার সার্ভারে

চট্টগ্রাম থেকে বিদেশগামী রেমিট্যান্সযোদ্ধারা করোনার ভ্যাকসিনের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। শুক্রবার প্রথম দিনেই লকডাউনের মধ্যে সশরীরে নগরীর আগ্রাবাদে জেলা জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে (বিএমইটি) রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়েও সফল হননি অন্তত এক হাজার বিদেশগামীর একজনও। একদিকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি, অন্যদিকে লকডাউনের খড়গ— এই দুয়ে মিলে নিবন্ধনে আগ্রহী বিদেশগামীরা এই ভোগান্তির ক্ষোভে একপর্যায়ে বিএমইটির সামনে বিক্ষোভও করেছেন।

জানা গেছে, শেষমেশ রেজিস্ট্রেশন করতে যাওয়া বিদেশগামীদের তথ্য জমা রেখে তাদের ফেরত পাঠিয়েছেন বিএমইটি অফিসের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, সার্ভার সংক্রান্ত জটিলতার কারণেই কারও রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা যায়নি।

চট্টগ্রাম জেলা জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) কর্মকর্তারা বলছেন, ‘আমি প্রবাসী’ নামে যে অ্যাপের মাধ্যমে বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন করা হয়, তার সার্ভার ডাউন বা অচল থাকায় প্রথম দিনে চট্টগ্রামে কারও রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। তারা বলছেন, সার্ভারের সমস্যা সমাধান হলে ঘরে বসেই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন প্রবাসীরা।

চট্টগ্রাম বিএমইটি কার্যালয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে যাওয়া মো. রুদ্র নামে এক বিদেশগামী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি সকাল থেকে বিএমইটির অফিসে ছিলাম। হাজারের ওপর মানুষ ছিল। রেজিস্ট্রেশনের জন্য ২০০ টাকা বিকাশে দেওয়ার একটা অপশন আছে। সেটার জন্য অ্যাপে ঢুকলে খালি লোডিং দেখায়। শেষ পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন হয়নি। উনারা বলেছেন কাল-পরশু আবার দেখতে। না হলে ৯ তারিখে যেতে।’

এই বিষয়ে কথা বলতে বিএমইটির চট্টগ্রামের উপ পরিচালক জহিরুল আলম মজুমদারের দুটি ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে দফায় দফায় কল করেও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে রাত ১০টার দিকে তার মোবাইল খোলা পাওয়া যায়। এ সময়ে বারবার কল করে এবং সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এসএমএস দিয়েও তার কাছ থেকে সাড়া মেলেনি।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএমইটির একজন কর্মকর্তা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি প্রবাসী অ্যাপের সার্ভারের সমস্যা থাকায় রেজিস্ট্রেশন করা যায়নি। আমরা সবার তথ্য রেখে দিয়েছি। কিন্তু রেজিস্ট্রেশনের জন্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ২০০ টাকা ফি জমা দিতে হবে। সেটা অ্যাপ ব্যবহার করা ছাড়া সম্ভব না। কাজেই অ্যাপের সার্ভার চালু না হলে সশরীরে এসেও লাভ নেই। আর অ্যাপ চালু হলে এখানে না এসে ঘরে বসেই সব করা যাবে।’

চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘অনেকে মনে করছেন এটি টিকার রেজিস্ট্রেশন। বিষয়টি আসলে তা নয়। টিকার রেজিস্ট্রেশন হবে মূলত সুরক্ষা অ্যাপে। আর সুরক্ষা অ্যাপে ভ্যাকসিনের জন্য প্রবাসীদের শনাক্ত করতে বিএমইটির ডাটাবেজ ব্যবহার করা হবে। এখানে রেজিস্ট্রেশন থাকলেই কেবল সুরক্ষা অ্যাপে প্রবাসী হিসেবে টিকার জন্য নিবন্ধিত হতে পারবেন।’

বিএমইটি রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মূলত আমি প্রবাসী অ্যাপ ব্যবহার করে ঘরে বসেই এই রেজিস্ট্রেশন করা যায়। এখানে যারা আসবেন তাদেরও আমরা রেজিস্ট্রেশন করাবো ওই অ্যাপ ব্যবহার করেই। অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করতে না পারলে তবেই বিএমইটি অফিসে আসার কথা আসে। কিন্তু এটা খুব কঠিন কিছুও না। কেউ অফিসে আসলে তাকে সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কোন আপত্তি নাই। তবে এই মহামারি পরিস্থিতির মধ্যে এটা তাদের জন্যই ঝুঁকির।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!