টানা বর্ষণে প্লাবিত উখিয়ার শতাধিক গ্রাম

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় টানা বর্ষণে নিম্নাঞ্চলের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দির শিকার হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। সোমবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ভারি বর্ষণ হয়। এর ফলে তলিয়ে যায় উখিয়ার বিভিন্ন এলাকার শতাধিক গ্রাম।

বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চাষাবাদ জমি, পশুর খামার, মাছের ঘের, পুকুর, শস্যক্ষেত। এছাড়া ডুবে যায় রাস্তাঘাট। কিছু কিছু রাস্তা ভেঙে গেছে। দোকানপাটে পানি ঢুকেছে। এর ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উখিয়া উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের বাসিন্দাদের।

ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উখিয়ার জালিয়াপালং, হলদিয়াপালং, রত্নাপালং, রাজাপালং ও পালংখালী। এর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পালংখালী ইউনিয়নের মানুষ। পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পালংখালী ইউনিয়নের তিন হাজার বাড়িঘরের মানুষ পানি বন্দি রয়েছে। পাহাড় ধসে ১৩টি বাড়ি ভেঙে গেছে। একজন আহত হয়েছে বলে জেনেছি। তিনি বলেন, কোনো সময় আমার বাড়ির উঠানে বন্যার পানি দেখিনি। আজ আমার বাড়ির ভেতরেও হাটুর উপরে পানি।

টানা বর্ষণে প্লাবিত উখিয়ার শতাধিক গ্রাম 1

জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কোনো হতাহতের খবর পাইনি। রত্নাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খাইরুল আমিন বলেন, নিচু এলাকাগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। পাহাড় ধসের খবর পাইনি।

রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, বেশকিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়েছে। বিভিন্ন বাড়িঘরসহ সরকারি বেসরকারি দপ্তরে পানি ঢুকেছে। উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম আজাদ জানান, বালুখালী এলাকায় ভারি বর্ষণে মাছচাষিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভালুকিয়ার কৃষি ব্যবসায়ি মাহমুদ মিয়া জানান, ধান রোপণ করেছি তিন দিন আগে। টানা ভারি বর্ষণে সব পানিতে তলিয়ে গেছে। পুকুরে ২০০০ মাছের পোনা দিয়েছি দুই সাপ্তাহ আগে সেগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

থাইংখালী তাজনিমারখোলা এলাকার হামিদুল হক জানান, অতি বৃষ্টির কারণে ফার্মের ৬০০ মুরগির বাচ্চা মারা গেছে। এদিকে, বেশকিছু এলাকার মানুষ পার্শ্ববর্তী সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে। তবে তাদের মধ্যে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা রয়েছে।

সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ভারি বর্ষণ হলেও দিনের বেলায় বৃষ্টি হালকা হয়েছে। তবে টানা হচ্ছে। কিছুকিছু এলাকা থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। টানা ভারি বর্ষণ আবারও হলে প্রচুর পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, টানা বর্ষণে বেশকিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িঘর পরিদর্শন করে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।

কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!