টাকা ‘খেয়ে’ ছাত্রলীগের কমিটি, জড়িতদের শাস্তি চান চট্টগ্রামের ৬ নেতা

চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তদন্ত করে এই ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির সাবেক ছয় নেতা। আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নেতৃত্ব বাছাইকে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে শহীদ হওয়া ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের স্মৃতির প্রতি চরম অসম্মানজনক আচরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তারা।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের আওতাধীন সীতাকুণ্ড উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। এছাড়া সীতাকুন্ডের আগের কমিটি বহাল রাখার জন্য জেলা ছাত্রলীগের আট লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণ ও পরে এর মধ্য থেকে সাত লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার বেশকিছু কল রেকর্ডও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীও দাবি করেছেন, টাকা নিয়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ সত্য। এ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাবেক ছয় ছাত্রনেতার এই বিবৃতি এলো।

শনিবার (২৮ নভেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে এই দাবি তোলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ৬ জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এরা হলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল হুদা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী মঞ্জু, সাবেক সভাপতি ইউনুস গনি চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, সাবেক সভাপতি রাজিবুল আহসান সুমন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবু তৈয়ব।

আর্থিক লেনদের মাধ্যমে নেতৃত্ব বাছাইকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে আদর্শিক চর্চার ক্ষেত্রে অনেক বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করে তারা বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া একটি আদর্শিক সংগঠন। ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনে মেধা ও মননের সমন্বিত চর্চার যে ধারাবাহিকতা সেটি রক্ষার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল নেতাদের এই মানসিকতা অনেক বড় ধরনের বাধা বলে আমরা মনে করি।’

বিবৃতিতে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের গৌরব উজ্জ্বল ভূমিকার কথা উল্লেখ করে নেতারা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি ও যুদ্ধের বিজয় সহ স্বাধীন দেশে জনক হত্যার পর স্বৈরাচার হটিয়ে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে অনেক চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় জামায়াত-শিবিরের ভয়াবহ সন্ত্রাস মোকাবেলা করতে গিয়ে এই ইউনিটের শত শত ছাত্রলীগ নেতা কর্মীর রক্ত ঝরেছে।’

আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনকে সেসকল শহীদ নেতাকর্মীদের প্রতি অসম্মানজনক আচরণ হিসেবে উল্লেখ করে তারা বলেন, ‘অসংখ্য আদর্শিক ছাত্রলীগ নেতা কর্মীর রক্তস্নাত পূণ্যভূমিতে আজকের যে কুসুমাস্তীর্ণ পরিবেশ সেটিকে কাজে লাগিয়ে আদর্শিক রাজনীতির ভীতকে আরও শক্তিশালী করার কথা। অথচ তার বদলে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে ত্যাগীদের বাদ দিয়ে যদি এভাবে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয় তাহলে এটি অতীতের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে প্রাণ দেওয়া শহীদ নেতাকর্মীদের স্মৃতির প্রতি চরম অসম্মানজনক আচরণ বলেই আমরা মনে করি।’

টাকা ‘খেয়ে’ ছাত্রলীগের কমিটি, জড়িতদের শাস্তি চান চট্টগ্রামের ৬ নেতা 1

এই ধরনের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সংগঠনের সাবেক নেতা হিসেবে আমরা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে উঠা এই অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!