টাকার লোভে রোহিঙ্গাকে ভোটার, চসিক কাউন্সিলরসহ ৬ জন দুদকের মামলায়

মো. নুর আলম। তিনি একজন রোহিঙ্গা নাগরিক। বিষয়টি জানার পরও গোপনে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে তাকে দেওয়া হয়েছে ওয়ার্ড অফিস থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদ।

ওই সনদের সহায়তায় তাকে যুক্ত করা হয়েছে ভোটার নিবন্ধন তালিকায়ও। একই সঙ্গে এই রোহিঙ্গা নাগরিককে দেওয়া হয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্রের স্মার্ট কার্ডও।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর, থানা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (১৫ জুন) বিকেলে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

অভিযুক্তরা হলেন, চট্টগ্রামের ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহরের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরফরাজ কাদের রাসেল, একই ওয়ার্ড অফিসের সাবেক জন্ম নিবন্ধন সহকারী মো. ফরহাদ হোসাইন, চট্টগ্রাম ডবলমুরিং থানার নির্বাচন অফিস কার্যালয়ের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. শাহজামাল, পাঁচলাইশ থানার নির্বাচন অফিস কার্যালয়ের অস্থায়ী সাবেক প্রুফ রিডার উৎপল বড়ুয়া, পাঁচলাইশ থানার নির্বাচন অফিস কার্যালয়ের অস্থায়ী সাবেক প্রুফ রিডার রত্ন বড়ুয়া এবং পাঁচলাইশ থানার নির্বাচন অফিস কার্যালয়ের সাবেক থানা অফিসার আব্দুল লতিফ শেখ।

দুদক সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তরা লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে একে অন্যের সহায়তায় ভুয়া পরিচয়ে নাম ঠিকানা ব্যবহার করে জনৈক নুর আলম নামের এক রোহিঙ্গাকে জন্ম নিবন্ধন সনদ দেয়। পরে এ সনদের সহায়তায় করা হয়েছে নির্বাচন অফিস থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রও। একই সঙ্গে দেওয়া হয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্রের স্মার্ট কার্ডও।

দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘জনৈক নুর আলম একজন রোহিঙ্গা নাগরিক। তাকে অর্থের বিনিময়ে দেওয়া হয়েছে ওয়ার্ড অফিস থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদ। এ সনদের সহায়তায় থানা নির্বাচর অফিস থেকে তাকে করা হয়েছে ভোটারও। একই সঙ্গে ওই রোহিঙ্গাকে দেওয়া হয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্রের স্মার্ট কার্ডও।’

অভিযুক্তরা ক্ষমতা অপব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজশে একজন রোহিঙ্গা নাগরিককে ভোটার বানিয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সরফরাজ কাদের রাসেল, থানা নির্বাচন কর্মকর্তা সহ মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। অভিযুক্তরা সবাই পলাতক রয়েছেন।’

মুআ/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!