ঝুঁকির ঈদ শেষে গাদাগাদি করে নগরে ফিরছে মানুষ

চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসনের দিনভর অভিযানে ৩৭ হাজার ৫শ টাকা জরিমানা

বাড়িতে ঈদ পালন শেষে করোনার চরম ঝুঁকির সময়ে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ভিড় করে নগরে ফিরছে মানুষ। ট্রাক, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশায়ও গাদাগাদি করে বসে চট্টগ্রাম নগরে ফিরছে লোকেরা। সামাজিক দূরত্ব নেই, তার ওপর যাত্রীদের সবাই ব্যক্তিগত সুরক্ষা নীতিও অনুসরণ করেননি। এছাড়াও নিষেধাজ্ঞা না মেনে অনেকে ঘুরতে গেছেন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতেও।

শুক্রবার (২৯ মে) সকাল ১০টা থেকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিনভর অভিযানে নগরীর এমনই চিত্র দেখা গেছে। অভিযানে মোট ৩২টি মামলায় ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

নগরীর পতেঙ্গা ও আকবর শাহ এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এহসান মুরাদ। অভিযানে পতেঙ্গা সৈকত এলাকায় গিয়ে তিনি দেখতে পান, ৩টি পরিবার ঘুরতে এসে মাদুর বিছিয়ে নাশতা করছিলেন। তারমধ্যে একজন ৭০ বছরের বৃদ্ধও ছিলেন। বৃদ্ধের পরিবার বলেছে, দীর্ঘদিন ঘরে বন্দি থাকায় বাবাকে নির্মল বাতাসে ঘুরতে নিয়ে এসেছেন। করোনা মহামারিতে বয়স্কদের বাইরে আনা ঝুঁকির তা মানতেও নারাজ পরিবারটি। এ ছাড়া একটি যুগলকে মোটরসাইকেল চড়ে সৈকত এলাকায় ঘোরার সময় আটক করা হয়। অভিযানে ৩ পরিবারকে ২ হাজার টাকা করে ৬ হাজার টাকা ও ওই যুগলকে ১ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

একই অভিযানে আকবর শাহ এলাকায় ট্রাক ও মাইক্রোবাসে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহনের দায়ে ১ টি ট্রাক ও ৪ টি মাইক্রোবাসকে চালক ও যাত্রীসহ মোট ৯ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানাসহ মোট ১২ টি মামলায় ১৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

পাহাড়তলী এলাকায় অভিযানে নেতৃত্ব দের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুরাইয়া ইয়াসমিন। অভিযানে দেখা যায়, সিটি গেট এলাকায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গাদাগাদি করে মাইক্রোবাসসহ ছোট যানবাহনে করে মানুষ চট্টগ্রাম নগরে প্রবেশ করছে। কয়েকটি মাইক্রোবাস আটক করে দেখা যায় ঈদের ছুটি শেষে কুমিল্লা, ফেনী, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ফিরছিলেন তারা। অভিযানে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের দায়ে ৭ টি মাইক্রোবাস চালককে ১১ হাজার টাকা ও পতেঙ্গা এলাকায় একজন মোটরসাইকেল আরোহীকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। মোট ৮টি মামলায় ১১ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

নগরীর বাকলিয়া, সদরঘাট, কোতোয়ালী, ডবলমুরিং ও হালিশহর থানাধীন বিভিন্ন জায়গায় করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী। অভিযানে বাকলিয়া কর্ণফুলী নতুন ব্রিজ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাসগুলো কোন ধরনের সামাজিক দূরত্ব না মেনে যাত্রী বহন করছে। অভিযানে গাদাগাদি করে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের দায়ে ১টি মাইক্রোবাস চালককে ২ হাজার ৫০০ টাকা, সিএনজি চালককে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। একই অভিযানে কোতোয়ালী থানা এলাকায় একাধিক আরোহী বহনের জন্য ৩ জন মোটরসাইকেল আরোহীকে ১ হাজার ৫০০ টাকাসহ মোট ৫ টি মামলায় ৪ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

চাঁন্দগাও, চকবাজার, বায়েজিদ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিরীন আক্তার। অভিযানে সামাজিক দূরত্ব না মেনে যাত্রী পরিবহনের দায়ে মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশাসহ ৩ যানবাহনকে ১ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেন তিনি।

বাকলিয়া, সদরঘাট, কোতোয়ালী, ডবলমুরিং ও হালিশহর এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। নকল মাস্ক বিক্রয়ের দায়ে ১টি মামলায় ৫০০ টাকা জরিমানা করেন তিনি।

পাঁচলাইশ, খুলশী, বায়েজিদ, চান্দগাঁও , চকবাজার এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত দামে ফল বিক্রির দায়ে তিনটি ফলের দোকানকে ১ হাজার টাকা করে মোট ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

সিএম/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!