জোড়া অফারের ‘ধোঁকাবাজিতে’ জেন্টল পার্ক, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা

নামি ব্র্যান্ডের মোড়কে জোড়া অফারের নামে জেন্টল পার্ক ফ্যাশন হাউজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান ক্রেতাদের সাথে করছে ধোঁকাবাজি। বিকাশে পেমেন্ট করলে ক্যাশব্যাক করার কথা থাকলেও সে সুবিধা পাচ্ছেন না ক্রেতারা। অভিযোগ করলে শোরুম কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি বিকাশের ব্যাপার।

জানা গেছে, জেন্টল পার্ক নতুন পোশাক কেনায় ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়াতে ঘোষণা দেয় ‘জোড়া মূল্যছাড় ক্যাম্পেইন’। তাদের ঢাকা, খুলনা, সিলেটের পাশাপাশি চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি, নিউমার্কেট ও স্যানমার ওশান সিটি, সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেট, ইউনেস্কো সিটি শপিং সেন্টারে শোরুম রয়েছে।

জানা গেছে, জেন্টল পার্কের শোরুমে যেকোনো পাঁচটি পোশাক বা ফ্যাশন অনুষঙ্গ কিনলেই ৩০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড়ের সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি অনলাইন কেনাকাটায় সকল পণ্যে দেওয়া হচ্ছে ২০ শতাংশ মূল্যছাড়। এছাড়া অনলাইনে স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ক্রেডিট কার্ডে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়ার কথাও বলা হয়।

কিন্তু এসব ‘অফার’ নিয়ে ক্রেতাদের অভিযোগের শেষ নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপ পেজ এমনকি জেন্টল পার্কের নিজস্ব ফেসবুক পেজেও এসব ‘ক্যাশব্যাক অফার’ নিয়ে ক্রেতারা ভোগান্তি ও প্রতিষ্ঠানের ধোঁকাবাজির কথা তুলে ধরছেন।

সাব্বির হাসান বাঁধন নামে একজন লিখেছেন, ‘ফাজলামির একটা সীমা থাকা উচিত।। আপনাদের প্রোডাক্টের যে পরিমাণ মূল্য তাতে ৪০ পার্সেন্টে অনায়াসে ৩০০ টাকার বেশি আসবে‌ সেখানে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা ক্যাশব্যাক পাবে এইসব ধান্ধা করে মানুষকে বোকা বানানো বাদ দেন।’

এর উত্তরে জেন্টল পার্ক বাঁধনকে উত্তরে জানায়, ‘স্যার অনুগ্রহ করে অফার সংক্রান্ত ব্যাপারে বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে কিছু বলার থাকলে বলেন। পুরো অফারটি বিকাশ থেকে দেওয়া।’

মাহমুদুল মাশুক নামে অন্য আরেক ক্রেতা মন্তব্য করেছেন, ‘সামান্য ট্রাউজারের দাম ২১০০-২২০০ টাকা রাখছেন। একটা ট্রাউজারের দামই ৪০% ডিসকাউন্টে আসবে না। হুদায় advertisement করবেন না। আপনাদের প্রোডাক্টের যে আকাশছোঁয়া দাম তাতে ৫% ডিসকাউন্টই আসবে না।’

শ্যামল সরকার লিখেছেন, ‘আপনাদের অফার দেখলে নিজেকে পাগল মনে হয়, ২টা কিনলে ১টা ফ্রি, ৩০% ছাড়, ৪০% ছাড় সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা, আচ্ছা এগুলোর মধ্যে পার্থক্যটা কী?’

শুভ্র সিহাব লিখেছেন, ‘আমি গত ৩ তারিখ এলিফ্যান্ট রোডের একটা শাখা থেকে একটি গেঞ্জি কিনেছি। বিকাশে পেমেন্ট করেছি। ৩০০ টাকা ক্যাশব্যাক আসার কথা বললেও কোনো টাকা ফেরত আসেনি।’

চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ী তার নিজস্ব ফেসবুক পেজের ওয়ালে জেন্টল পার্ককে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, ‘নগরীর জিইসির মোড় এলাকার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বাইরে ব্যানারে আছে, ‘উৎসব শুরু হোক বিকাশের সাথে, পেমেন্ট বিকাশ করলে ৪০% ক্যাশব্যাক’। অথচ ২ হাজার ৭৯০ টাকার মার্কেটিং করে বিকাশে পেমেন্ট করে ক্যাশব্যাক পেলাম ৫৯ টাকা ৭০ পয়সা। বিষয়টা না বুঝে ঈদের বাজারে ঝামেলার মাঝে কারণ জানতে চাইলে কর্তৃপক্ষ বিকাশের শর্তের কথা বলে এড়িয়ে যায়। এ কেমন প্রতারণা? এখানে প্রতারক কে— ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান না বিকাশ?’

ক্রেতাদের অভিযোগ নিয়ে জেন্টল পার্কের চেয়ারম্যান ও চিফ ডিজাইনার শাহাদাৎ চৌধুরী বাবু মুঠোফোনে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আসলে ক্যাশব্যাকের বিষয়টি মনিটরিং করছে বিকাশ। আমাদের সাথে একটা চুক্তি আছে এই যা। এখন ওরা কত টাকা ব্যাক করবে নাকি করবে না তা তো আমরা বলতে পারবো না।’

আইএমই/এসএ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!