জেএম সেনের বাড়ি কব্জায় নিল চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন

চট্টগ্রামের ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি জড়িয়ে থাকা যাত্রামোহন সেনগুপ্তের (জেএম সেন) বাড়িটি অবশেষে জেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। ভবনটির সামনে যেটুকু অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছিল, সেখানে একটি সাইনবোর্ডও টাঙিয়ে দিয়েছে ডিসি অফিসের পক্ষ থেকে। অন্যদিকে দখলকারীদের তিনটি নোটিশ বোর্ড সরিয়ে নেওয়া হয়।

শনিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকালে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) বদিউল আলম ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তারের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের একটি টিম ঐতিহাসিক বাড়িটি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

চট্টগ্রাম নগরীর রহমতগঞ্জে ১৯ গণ্ডা জমিতে বাড়িটি তৈরি করেছিলেন কলকাতা পুরসভার ৫ বারের মেয়র দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তের বাবা ভারতীয় কংগ্রেসের নেতা যাত্রামোহন সেনগুপ্ত। চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বরমা ইউনিয়নে জন্ম নেওয়া যাত্রামোহন ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও।

‘শত্রু সম্পত্তি’ ঘোষিত হওয়া বাড়িটি এক সময় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে ইজারা নেন শামসুদ্দিন মো. ইছহাক নামের এক ব্যক্তি। সেখানে শিশুবাগ নামে একটি স্কুল চালিয়ে আসছিলেন। ইছহাকের মৃত্যুর পর তার ছেলে সেই স্কুল পরিচালনা করছেন ওই জায়গায়।

জানা গেছে, যাত্রামোহন সেনগুপ্তের পরিবারের কাছ থেকে কিনেছেন— এমন দাবি করে গত ৪ জানুয়ারি এম ফরিদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি আদালতের একটি আদেশসহ বাড়িটি ভাঙতে যান। খবর পেয়ে ভাঙার এই তৎপরতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। সোচ্চার হয়ে ওঠেন বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। বিক্ষোভের মুখে ওই দিনই বাকলিয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাড়িটিতে তালা ঝুলিয়ে দেন।

এরপর এ নিয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হলে বাড়িটি ভাঙার ওপর এক মাসের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

এরপরই চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন বাড়িটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিল। বাড়িটিকে ঘিরে একটি জাদুঘর তৈরির চিন্তাভাবনাও চলছে সরকারিভাবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!