আজিজুল ইসলাম, হাটহাজারী ঃ উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী’র বর্তমান মহাপরিচাল হেফাজত আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী’র শারীরিক অসুস্থতার দিকটি বিবেচনায় এনে হেফাজতের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরীকে মুঈনে মুহতামিম বা সহকারী মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও জামিয়ার শিক্ষাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান ফিকাহ্বিদ আল্লামা মুফতী নুর আহমদকে এবং মাওলানা আনাস মাদানীকে সহকারী শিক্ষাসচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়। জামিয়ার সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী কমিটি ২১ মজলিসে শূরা সদস্যদের মধ্যে ১৫ জন সদস্য উপস্থিতে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
শনিবার (১৫ জুলাই) সকাল ৯টায় দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালকের কার্যালয়ে হেফাজত আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী’র সভাপতিত্বে মজলিসে শূরা’র বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত প্রায় ৩ ঘন্টা ব্যাপী বৈঠকে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা বিভাগ, হিসাব বিভাগ ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের উপর দীর্ঘ পর্যালোচনা ও নীরিক্ষা করা হয়। বৈঠকে শূরার সকল সদস্য আল্লামা শাহ আমদ শফী’র সুদক্ষ পরিচালনায় দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার অভূতপূর্ব উন্নতি, প্রশাসনিক শৃঙ্খলা এবং স্বচ্ছ ও সুন্দর ব্যবস্থাপনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। একই সাথে শূরা সদস্যগণ আল্লামা শাহ আহমদ শফী’র আশু রোগমুক্তি ও দীর্ঘ হায়াতের জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট বিশেষভাবে দোয়া ও মোনাজাত করেন।
মজলিশে শূরার বৈঠকে ৩টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্ত গুলোর মধ্যে অন্যতম হল বর্তমান মহাপরিচাল হেফাজত আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী’র শারীরিক অসুস্থতার দিকটি বিবেচনায় এনে তাঁকে দৈনন্দিন কাজে সহযোগিতা করার জন্য হেফাজতের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনাইদ বাবুনগরীকে সহযোগী পরিচালক হিসেবে নিযুক্তি দেওয়া হয়। এছাড়া আল্লামা মুফতী নূর আহমদকে শিক্ষাসচিব এবং বর্তমান মহাপরিচাল হেফাজত আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী’র কনিষ্ঠ ছেলে মাওলানা আনাস মাদানীকে সহকারী শিক্ষা সচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আল্লামা শাহ আহমদ শফী অবসরে যাচ্ছেন বলে কতিপয় সংবাদপত্রে পরিবেশিত সংবাদকে চরম বিভ্রান্তিকর আখ্যা দিয়ে মজলিশে শূরার সদস্যবৃন্দ একমত পোষণ করে বলেন যে, বর্তমান মহাপরিচালকের জীবদ্দশায় কাউকে কখনোই ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালকের দায়িত্বে নিয়োগ দেওয়া হবে না। দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার ইতিহাসে এমন নজির নেই। দুপুর ১২টায় দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে মজলিশে শূরার বৈঠক শেষ হয়।