জাহাজেরও জট এবার চট্টগ্রাম বন্দরে, ভেঙে পড়েছে শৃঙ্খলা

কন্টেইনার জট সামাল দিতে গিয়ে এবার চট্টগ্রাম বন্দরে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ জাহাজজট। বন্দর ও বহির্নোঙ্গরে এখন প্রতিদিন গড়ে কনটেইনারবাহী ৩৩টিরও বেশি জাহাজ অবস্থান করছে। জাহাজ থেকে কনটেইনার আনলোড করতে না পারায় জাহাজকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে জেটি ও বহির্নোঙ্গরে। কারণ বন্দরের ইয়ার্ডে একন কনটেইনার রাখার জায়গা নেই।

রোববার (১৯ এপ্রিল) চট্টগ্রাম বন্দর ও বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে মোট জাহাজ ছিল ১২৪টি। এর মধ্যে কন্টেইনারবাহী জাহাজ রয়েছে ৪৬টি। অথচ স্বাভাবিক সময়ে কন্টেইনারবাহী জাহাজের সংখ্যা থাকে ১৫ থেকে ২০টি। অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রতিদিন ডেলিভারি হচ্ছে মাত্র ১ হাজার থেকে ১২শ কনটেইনার। অথচ স্বাভাবিক সময়ে ৪ থেকে ৫ হাজার কনটেইনার প্রতিদিন ডেলিভারি হয়ে থাকে।

কন্টেইনার জট কমাতে বন্দর কর্তৃপক্ষ আনলোডের ক্ষেত্রে রেশনিং সিস্টেম চালু করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রমে শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর অংশ হিসেবে টানা সরকারি বন্ধ চলছে। আর এই বন্ধের মধ্যে পুরোদমেই চলছে চট্টগ্রাম বন্দর। প্রথম পর্যায়ে ভোগ্যপণ্য, ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী খালাস করা হতো। আর এখন তার সাথে যুক্ত হয়েছে ভারী শিল্পের কাঁচামালও। আর এই বন্দর পুরোদমে চালু রাখতে দেওয়া হচ্ছে নানা রকম প্রণোদনাও।

জানা গেছে, আমদানি করা পণ্য নিয়ে আসা কন্টেইনার ডেলিভারির ধীরগতিই চট্টগ্রাম বন্দরকে একপ্রকার কাবু করে রেখেছে। অনেকটা রেশনিং সিস্টেমেই জাহাজ থেকে কন্টেইনার নামছে। অর্থাৎ যেদিন যত কনটেইনার ডেলিভারি হবে, ওই দিন জাহাজ থেকে সেই পরিমাণে কনটেইনার নামবে। সে অনুযায়ী কনটেইনার আনলোডের পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছে।

এদিকে বন্দরের ভয়াবহ কনটেইনার জট কমাতে আরও ছয়টি পণ্যে বেসরকারি ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোতে (অফডকে) খালাসের সিদ্ধান্ত দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর। কিন্তু এতে তেমন সুফল আসবে না বলে দাবি করেছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। কারণ ছয়টি পণ্যের কনটেইনার হচ্ছে ১ হাজার টিইউএসের মতো। অথচ বন্দর থেকে জট কমাতে কমপক্ষে ২০ হাজার টিইউএস কনটেইনার সরাতে হবে।

বন্দরের কনটেইনার জট ও জাহাজজট কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করি শিগগিরই সমাধান হয়ে যাবে।

ফ্রেইড এন্ড ফরোয়ার্ড এসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, ‘ডেলিভারি যদি সঠিক সময়ে না করা হয় তাহলে পরে এটি ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।’

চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেকের প্রধান নির্বাহী ক্যাপ্টেন তানভীর আহমেদ বলেন, ‘ডেলিভারি প্রায় ৮০ শতাংশ কমে গেছে। আর ডেলিভারি ঠিকমতো না হলে পরবর্তীতে এটি ভয়ংকর রূপ ধারণ করবে।’

এএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!