জালিয়াতি ঠেকাতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ডিজিটাল এক্সিট পয়েন্ট
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ডিজিটাল এক্সিট কোড চালু করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। এজন্য বিমান বন্দরে ডিজিটাল এক্সিট পয়েন্ট খোলা হচ্ছে। জালিয়াতি রোধ করার জন্য ডিজিটাল পদ্ধতির অংশ হিসেবে এটি চালু করছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। এর ফলে কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তা এবং সিএন্ডএফ এজেন্ট ও আমদানি-রপ্তানি কোম্পানির সঠিক তথ্য সংরক্ষণ থাকবে। কয়েক দিনের মধ্যে ডিজিটাল এক্সিট কোডের উদ্বোধন করা কথা রয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের এয়ারপোর্ট এন্ড এয়ারফ্রেইট ইউনিটের উপ কমিশনার রেয়াদুল ইসলাম জানান, ‘আগে শাহ আমানত বিমান বন্দরে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস আমদানি-রপ্তানির পণ্যের ওপর সরকারি রাজস্ব আদায় করতো ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে। ফলে কোন মালামাল ডেলিভারি হয়েছে কিনা, নাকি মালামাল কার্গো হাউসে রয়ে গেছে সেটির তথ্য পাওয়া যেত না। এ কারণে মালামাল চুরি করার অনেক সুযোগ থেকে যায়। এছাড়া জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে মালামাল ডেলিভারি করা হতো। ডিজিটাল এক্সিট পয়েন্ট চালু করায় এখন থেকে জালিয়াতি রোধ ও শুল্ক আদায় সহজ হবে।’
জানা গেছে, সম্প্রতি ওয়াটারওয়েজ নামের একটি সিএন্ডএফ কোম্পানি জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের কার্গো হল থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে পণ্য খালাস করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কাস্টমসের বিশেষায়িত সফটওয়্যার অ্যাসাইকুডা নেটওয়ার্ককে ফাঁকি দিয়ে পণ্য খালাসের ঘটনায় অভিযুক্ত সিএন্ডএফ এজেন্ট ওয়াটারওয়েজ শিপিং এজেন্সিস লিমিটেডের সম্পৃক্ততার বিষয়টি প্রাথমিক কয়েকটি তদন্তে প্রমাণিত হয়। এতে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের জাল জালিয়াতির বিষয়টি কাস্টমস হাউসের নজরে আসে। এর ফলে জালিয়াতির রোধের জন্য আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয় সংস্থাটি।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের কমিশনার ফখরুল আলম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ডিজিটাল এক্সিট কোড চালুর ফলে বিমানবন্দরের কার্গো হল থেকে শুল্ক পরিশোধ ছাড়া পণ্য খালাসের ঘটনা আর ঘটবে না।
কাস্টমস কমিশনার জানান, এক্সিট কোডের ফলে বিল অব এন্ট্রিতে অনিয়ম সংগঠিত হয়েছে কিনা, কী কী ধরনের অনিয়ম— পণ্য পরীক্ষা না করা, শুল্কায়ন না করা, শুল্ক কর পরিশোধ না করে পণ্য খালাস গ্রহণ ইত্যাদি, পণ্য চালানের ক্ষেত্রে অ্যাসাইনমেন্ট নোটিশ বা রিলিজ অর্ডার ইস্যু করা হয়েছে কিনা সব জানা যাবে কম্পিউটারে এক ক্লিকেই।
চট্টগ্রাম সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম আকতার হোসেন বলেন, বিমানবন্দরে এক্সিট কোড চালু হলে শুল্ক আদায় বাড়বে। এটিকে আমরাও সাধুবাদ জানাই। কারণ আমাদের সংগঠন জালিয়াতির বিরুদ্ধে।
এদিকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানববন্দরে গত ২০ বছরে যাত্রীদের ফেলে যাওয়া ৮০০ ব্যাগ রয়েছে। প্রবাস থেকে নিয়ে আসা প্রসাধনী সামগ্রী, খাবার, খেজুর, গুঁড়ো দুধ, চকলেট, কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্য ফেলে গেলেও নানা ঝক্কি ঝামেলায় সেসব পণ্য আর নিয়ে যায়নি তারা। এসব পণ্যের তথ্যও কম্পিউটারে সংরক্ষণ থাকবে বলে জানা গেছে।
এএস/সিপি