জালিয়াতির দায়ে লায়ন্স ভাইস গভর্নর সাদাত দোভাষ কারাগারে

প্রতারণা ও জালিয়াতির দায়ে লায়ন্স ভাইস গভর্নর আল সাদাত দোভাষকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত এ আদেশ দেন। সাদাত দোভাষ নগরীর ফিরিঙ্গিবাজার এলাকার ইয়াকুব নগরের আবদুল গাফফার দোভাষের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম ক্লাব লিমিডেটের ভাইস চেয়ারম্যান।

সারাসিন ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি জয়েন্ট স্টক কোম্পানির দুই পরিচালকের স্বাক্ষর নকল করে ব্যবসার অভিযোগ এনে আল সাদাত দোভাষ ও তার মা খুরশীদা বেগমকে আসামি করে ২০১৭ সালের ১ আগস্ট চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একটি ফৌজদারি অভিযোগ করেন শামীম আরা রাজ্জাক নামের এক নারী। অভিযোগে বলা হয়েছে, শামীম আরা ও তার ছেলে মাশরিকি আলী দোভাষের স্বাক্ষর নকল করে তাদের না জানিয়ে ভুয়া বোর্ড রেজুলেশন ও ভুয়া ফরম ১১৭ এর মাধ্যমে তাদের শেয়ার আত্মসাৎ করেছে সাদাত দোভাষ ও তার মা।

গত বছরের ১৮ নভেম্বর আল সাদাত দোভাষ ও তার মা খুরশীদা বেগমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পরবর্তীতে উচ্চ আদালত থেকে তারা ছয় মাসের অন্তর্বর্তী জামিন নেন। মেয়াদ শেষ হলে স্থায়ী জামিনের জন্য আল সাদাত দোভাষ মঙ্গলবার আদালতে হাজির হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

অভিযোগপত্রে শামীম আরা বলেন, ‘আল সাদাতের বাবা আবদুল গাফফার দোভাষ ও শামীম আরা মিলে ১৯৯৮ সাল থেকে সারাসিন ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি জয়েন্ট স্টক কোম্পানির রেজিস্ট্রিভুক্ত স্টিভিডোর (জাহাজের মালামাল আনলোড) ব্যবসা করতেন। ২০০৯ সালের শেষের দিকে সাদাতের বাবা গাফফার দোভাষ কোম্পানির আর্টিকেল অব মেমোরেন্ডামের নিয়ম ভঙ্গ করে ব্যবসা করেন। কিন্তু সেই ব্যবসার লভ্যাংশ থেকে শামীম আরাকে বঞ্চিত করেন।’

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘২০১০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি কোম্পানির বোর্ড অফ ডিরেক্টর মিটিং ডাকা হলে তা আমলে না নিয়ে সাধারণ সভার অডিট ছাড়া গাফফার দোভাষ ব্যবসা চলিয়ে যান। ২০১৩ সালের ৩০ জুন আমমোক্তারমূলে শামীম আরার স্বামী আবদুল রাজ্জাক দোভাষ ‘সারাসিন ইন্টারন্যাশনাল’ যাতে শিপ হ্যান্ডলিং টেন্ডারে অংশ নিতে না পারে তার আবেদন জানিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে একটি চিঠি দেন। ২০১৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি গাফফার দোভাষ মারা যান।’

শামীম আরা বলেন, ‘বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেওয়ার পর এতোদিন সারাসিন ইন্টারন্যাশনালের সব ধরনের কার্যক্রম স্থগিত ছিল। ২০১৭ সালের তিনি জানতে পারেন গাফফার দোভাষের স্ত্রী খুরশীদা ও ছেলে আল সাদাত শামীম আরা ও তার ছেলে মাশরিকি আলী দোভাষের (মাশফিক) স্বাক্ষর জাল করে সারাসিন ইন্টারন্যাশনালের নামে ফের ব্যবসা শুরু করেছেন।’

২০১৭ সালের ১ আগস্ট শামীম আরা রাজ্জাকের অভিযোগটি আমলে নিয়ে পুলিশের বিশেষায়িত সংস্থা সিআইডিকে তদন্তের আদেশ দেন আদালত। এক বছরেরও বেশি সময় তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২ জুলাই আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক এএম ফারুক। এরপর ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর আল সাদাত ও তার মা খুরশীদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেম মোহাম্মদ নোমান।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!