জাপানের মঞ্চে বাজলো ‘তোরা হন হন যাবি আঁর সাম্পানে…’

চট্টগ্রামপ্রবাসীদের মিলনমেলা

জাপানে প্রথমবারের মতো নবান্ন উৎসবে মেতে উঠেছিল চট্টগ্রামের প্রবাসীরা। ৮ ডিসেম্বরের আয়োজনটি ছিল জাপানে চট্টলাবাসীর দ্বিতীয় মিলনমেলা।

নবান্ন উৎসব ছিল ঠিক যেন গ্রামবাংলাকে কাছ থেকে দেখার একটি স্বচ্ছ আয়না। ছেলেমেয়েদের ছড়া, কবিতা, গান এবং বড়দের চট্টগ্রামের জনপ্রিয় গান ও আড্ডায় মুখরিত ছিল পিঠাঘর। সমবেত সংগীতে স্থান করে নিয়েছিল—‘বাঁশখালী…মহেশখালী/ বাঁশখালী…মহেশখালী/ পাল উড়াইয়া দিলে সাম্পান গুরগুরাই টানে/ ওরে পাল উড়াইয়া দিলে/ সাম্পান গুরগুরাই টানে/ তোরা হন হন যাবি আঁর সাম্পানে…/ তোরা হন হন যাবি আঁর সাম্পানে’ গানটি।

কথা, গান আর উন্মুক্ত আড্ডার ফাঁকে কখন যে দুপুর হলো আর খাবার টেবিলও সব্যসাচী নারীদের হাতের স্পর্শে চোখের পলকেই গ্রামবাংলার মজাদার ও লোভনীয় খাবারে ভরে গেল, টেরই পাওয়া গেল না। একেই কি বলে, যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে!

জাপানের মঞ্চে বাজলো ‘তোরা হন হন যাবি আঁর সাম্পানে...’ 1

জাপানে চট্টলার পিঠাঘরে দেখা মিলল নানান রকমের পিঠা সঙ্গে দুপুরের কিছু আয়োজন। পিঠা ও অন্য খাবারগুলোর মধ্যে এগুলোর নাম না বললেই নয়। নকশি পিঠা, দুই রকমের (নারকেল) পোয়া পিঠা, ঝাল চন্দ্রপুলি পিঠা, পায়েস, সমুচা, ভাপা পিঠা, কলা পিঠা, নুডলস, তেলের পিঠা, সাদা ভাত, মাটন রেজালা, টমেটোর চাটনি ও চিকেন বিরিয়ানি।

যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম আর চেষ্টায় গ্রামবাংলার চিরচেনা এক রূপ দেখলো সবাই তারা হলেন লীনাদি, ছন্দাদি, হ্যাপি ও শান্তা। ধন্যবাদ তাদের প্রাপ্য।

এবার আরও একটি নতুন মুখ ছিল অনুষ্ঠানে। ‘আমাদের চাটগাঁর জামাই’। কুড়িগ্রামের এই মানুষটি বিনি সুতোর বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন চট্টলার এক নারীর সঙ্গে। তাই তার প্রিয় শালা ও শালী সম্বোধনে রাগ করার উপায় ছিল না।

গল্প আর আড্ডার মধ্য দিয়ে কখন যে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে এল, বুঝতেই পারলাম না। কর্মব্যস্ত জীবনে তাড়া ছিল সবকিছু গুছিয়ে বাসায় ফেরার। আমাদের কাজে হাত লাগাতে কুণ্ঠাবোধ করল না আমাদেরই কর্মঠ পুরুষেরা। তাপসদা, সনৎদা, মঈন, রুবেল ও খায়রুল। তাদেরও মনে ঠাঁই দিলাম লেখার ফাঁকে। মনে ধ্বনিত হলো একতার সুর। একটি দিন ঠিক যেন সবার মনের গহিনে নবান্নকে ধরে রাখার অক্লান্ত চেষ্টার সফল পরিণতি।

এভাবেই খুঁজে পেলাম প্রবাসেও আমি আমার গ্রামবাংলাকে। হারিয়ে গেলাম আমি আমার গ্রামবাংলায়…।

অনুষ্ঠান পরিকল্পনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় ছিলাম আমি শারমিন আরসা উল্লাহ ও খায়রুল বাশার।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!