জাতীয় লিগে খুলনা ও সিলেটের জয়, এবারও ড্র করলো চট্টগ্রাম

জাতীয় ক্রিকেট লিগের টায়ার ওয়ানের খুলনা-রাজশাহীর লড়াইয়ে বোলারদের দাপটে সহজ জয় পেয়েছে স্বাগতিক খুলনা। টায়ার ওয়ানের চট্টগ্রাম ভেন্যুর ঢাকা-রংপুরের খেলায় চলে ব্যাটসম্যানদের রাজত্ব। হাজার রান ওঠার এই ম্যাচে উভয় দল মাত্র একটি করে ইনিংস শেষ হতে পারে। অন্যদিকে টায়ার টু এর ঢাকা মেট্রো-সিলেটের লড়াইয়ে ঢাকার মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরিকে ম্লান করে জয়সূচক সেঞ্চুরি করে সিলেটকে জয় এনে দেন ইমতিয়াজ।

টায়ার-১
খুলনা-রাজশাহী:

খুলনায় লো-স্কোরিং ম্যাচে রাজশাহীর বিপক্ষে চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা। খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিনেই জয়ের মঞ্চ তৈরি করে রেখেছিল স্বাগতিক দল। রাজশাহীকে শেষপর্যন্ত তারা হারিয়েছে সহজেই। ১০৮ রান করতে শেষদিনে খুলনার হাতে ছিল পুরো ৯০ ওভার ও ৯ উইকেট। এদিন দুটি উইকেট হারিয়ে প্রথম সেশনেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে তারা। ৭ উইকেটের জয় তুলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেছে আব্দুর রাজ্জাকের দল।

১২৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৫৯ বলে অপরাজিত ৫০ রান করেন সৌম্য সরকার। মেহেদী হাসান মিরাজ অপরাজিত থাকেন ১৪ রানে। মোহাম্মদ মিঠুন ২৭ ও ইমরুল কায়েস করেন ২২ রান। ৪ রান করে আগের দিনের বিকেলে আউট হন খুলনার ওপেনার এনামুল হক বিজয়।

ঢাকা-রংপুর:

চট্টগ্রামে ঢাকা ও রংপুর বিভাগের ম্যাচে রান উৎসব হলেও ফল হয়নি। দুই দলই প্রথম ইনিংসে তোলে পাঁচশর বেশি রান। সাইফ হাসানের অপরাজিত ডাবল সেঞ্চুরি (২২০) ও রনি তালুকদার (৬৫), রকিবুল হাসান (৫৭), নাদিফ চৌধুরীর (৬১) ফিফটিতে ৮ উইকেট হারিয়ে ৫৫৬ রানে ইনিংস ঘোষণা করে ঢাকা। জবাবে লিটন দাস (১২২) ও নাঈম ইসলামের (১৩৫) সেঞ্চুরি, সোহরাওয়ার্দী শুভর অপরাজিত ৯২ ও তানবীর হায়দারের ৭৩ রানের ইনিংসে ভর করে ৫০৮ রান তোলে রংপুর।

৪৮ রানে এগিয়ে থাকা ঢাকা শেষদিনের পড়ন্ত বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ ওভার খেলে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১০ রান তোলার পর ড্র হয়ে যায় ম্যাচটি।

খেলা শেষে ম্যাচ সেরা সাইফ হাসানের হাতে পুরস্কার তুলে দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সহসভাপতি ও প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস।

টায়ার-২
ঢাকা মেট্রো-সিলেট

প্রথম ইনিংসে ৬৩, দ্বিতীয় ইনিংসে ১১১। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ডাবল লড়াই ঢাকা মেট্রোকে শেষদিন পর্যন্ত ম্যাচে রাখলেও পরাজয় এড়ানোর জন্য যথেষ্ট হয়নি। ইমতিয়াজ হোসেনের অপরাজিত ১১০ রান মেট্রোর বিপক্ষে সিলেটকে এনে দিয়েছে ৮ উইকেটের দারুণ এক জয়।

বগুড়ায় জাতীয় লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে টায়ার-২ এর ম্যাচটিতে প্রথম ইনিংসে ২৪৬ তুলেছিল ঢাকা মেট্রো। সিলেট বিভাগ প্রথম ইনিংসে ৩১৯ তুলে ৭৩ রানে লিড নেয়।

দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে বিপর্যয়ে পড়ে মেট্রো। মাহমুদউল্লাহ ত্রাতার ভূমিকায় লড়াই জমিয়ে দেন। ৬ উইকেটে ২২৫ তুলে তৃতীয় দিন শেষ করে দলটি। ৪ উইকেট হাতে রেখে বরিশালের চেয়ে ১৫২ রানে এগিয়ে থেকে।

লিড আরও বড় করার আশা দিচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ, ছিলেন ৯৫ রানে অপরাজিত। রোববার দ্রুতই তুলে নেন শতক। কিন্তু ৬ চার ও এক ছয়ে ২৪৩ বলে তিনি ১১১ করে ফেরার পর বেশিদূর এগোয়নি মেট্রোর ইনিংস।

তাতে ২৭৩ রানে অলআউট হয়ে যায় মেট্রো। সিলেটের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২০০ রানের। যা ২ উইকেট হারিয়ে ৫২.২ ওভারে তুলে নেয় সিলেট বিভাগ। অপরাজিত সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ইমতিয়াজ হোসেন তান্না নায়ক বনে যান, জাকির হাসান করেন ফিফটি।

ইমতিয়াজ ও জাকির ১৬২ রান যোগ করেছেন জুটিতে। শেষপর্যন্ত ১১ চার ও এক ছক্কার ইনিংস সাজিয়ে ১৭৮ বলে ১১০ রানে অপরাজিত থাকেন ইমতিয়াজ। জাকির হাসান দলকে জয়ের দোরগোড়ায় রেখে ফিরে যান ৭২ করে।

চট্টগ্রাম-বরিশাল:

অন্য ম্যাচে, ড্র করেছে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগ। চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংসে ৩৫৬ রান তুলেছিল। বরিশাল বিভাগকে পরে ২১৬ রানে অলআউট করে ১৪০ রানের বড় লিড নেয় তারা।

শেষদিনে চট্টগ্রাম বিভাগ ৬ উইকেটে ১৯৫ করে ইনিংস ছাড়ে। বন্দরনগরীর দলটি বরিশালকে দেয় ৩৩৫ রানের লক্ষ্য। কিন্তু প্রতিপক্ষকে অলআউট করার পর্যাপ্ত সময় পায়নি তারা।

শাহরিয়ার নাফিস ৪২, মোহাম্মদ আশরাফুল ৬০, মোসাদ্দেক হোসেনের ৩৫ রানে ম্যাচ বাঁচিয়ে ফেলে বরিশাল। তারা ৭ উইকেটে ১৭৪ তোলার পর ম্যাচে ড্র মানতে হয় চট্টগ্রামকে।

প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেয়া নাঈম হাসানের দ্বিতীয় ইনিংসেও শিকার সমান উইকেট। নোমান চৌধুরী ২টি ও মাসুদ খান একটি করে উইকেট নিলেও তা চট্টগ্রামের জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!