জশনে জুলুসের মিছিলে আগুনে পুড়ল দুই শিশুসহ ৬ জন
চট্টগ্রামের লালখানবাজার এলাকায় ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আয়োজিত জশনে জুলুসে একটি পিকআপ ভ্যানে থাকা জেনারেটর বিস্ফোরণে দুই শিশুসহ ৬ জন দগ্ধ হয়েছেন। পিকআপে সাউন্ডসিস্টেম চালানোর জন্য রাখা জেনারেটরে আগুন ধরে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুরের এ দুর্ঘটনায় আহতরা হলেন মনু মিয়ার ছেলে নুর নবী (৬) ও মো. কাউছার (২০), জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে রফিকুল ইসলাম (১৩), সালাউদ্দিনের ছেলে রিফাত (১০), মো. জাকিরের ছেলে ইয়ামিন (৯) এবং সিরাজ মিয়ার ছেলে হৃদয় (১৬)। তারা সকলেই বাকলিয়া ১৯নং ওয়ার্ডের তুলাতলী এলাকার চেয়ারম্যান ঘাটা(বালুর মাঠ) হতে জশনে জুলুসে অংশ নেওয়ার জন্য এসেছিল।
দুপুর দুইটার দিকে দগ্ধদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদেরকে হাসপাতালের ৩৬ নম্বর বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সহকারী রেজিস্ট্রার নাফিজ আলম জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে রিফাতের ৪০ শতাংশ, রফিকুল ইসলামের ১৫ শতাংশ ও হৃদয়ের ১১ শতাংশ শরীর পুড়েছে। এ ছাড়া বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
১২ রবিউল আউয়াল ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে প্রতিবছরের মত রোববারও চট্টগ্রামে বিশাল জশনে জুলুসের আয়োজন করে আঞ্জুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট। এ উপলক্ষে নগরীতে বের করা হয় শোভাযাত্রা। বিপুলসংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণে শোভাযাত্রাটি বিভিন্ন পরিবহনযোগে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় পরিবহনগুলোতে সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে বিভিন্ন ধর্মীয় হামদ নাত প্রচার এবং পথচারীদের মধ্যে মিষ্টিজাতীয় খাদ্য বিতরণ করা হয়।
দুর্ঘটনার পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, দগ্ধদের কারও পা, কারও হাত ব্যান্ডেজে মোড়ানো। যন্ত্রণায় তারা ছটফট করছিল। কিন্তু কেউই কথা বলতে পারছে না। স্বজনরা পাশে বসে বিলাপ করছিলেন।
দগ্ধ রিফাত হোসেন চর চাক্তাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। সে বাসায় না জানিয়ে জশনে জুলুসের মিছিলে যোগ দিয়েছিল। তার শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় চিকিৎসকরা রিফাতের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন।
রিফাতের বাবা সালাহউদ্দিন বলেন, ‘সে কোথায় গেছে আমরা জানতাম না। পরে খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে দেখি তার শরীরে ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। আমার ছেলের শরীর পুড়ে গেছে।’
আরেক দগ্ধ রফিকুল ইসলাম কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। স্থানীয় ইউসেপ বিদ্যালয় থেকে সে এবার জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। তার পরিবার নগরের কালামিয়া বাজার এলাকার বসবাস করে। আগামী বৃহস্পতিবার তার গণিত পরীক্ষা রয়েছে। কিন্তু বাসায় না জানিয়ে সেও বন্ধুদের সঙ্গে মিছিলে যোগ দেয়।
সিপি