জরুরি চিকিৎসায় ‘না’ বলতে পারবে না কোনো হাসপাতাল, আদেশ হাইকোর্টের

কোনো হাসপাতাল জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতে অসম্মতি জানাতে পারবে না— অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে একথা জানিয়ে দিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অসুস্থ ব্যক্তিকে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দিতে অসম্মতি জ্ঞাপন কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। হাইকোর্টের এ আদেশের ফলে সব হাসপাতালই মুমূর্ষু রোগীকে জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতে বাধ্য থাকবে।

অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকের নতুন লাইসেন্স ইস্যু করার সময় এবং বিদ্যমান রেজিস্টার্ড হাসপাতাল বা ক্লিনিকের লাইসেন্স নবায়ন করার সময় জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদান বিভাগ আবশ্যিকভাবে থাকতে হবে— এমন শর্ত যুক্ত করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, রুলে সেটিও জানতে চাওয়া হয়েছে।

রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি হেলথ), বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালত আদেশে বলেন, কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে যখনই হাসপাতাল বা ক্লিনিক অথবা চিকিৎসকদের কাছে নেওয়া হবে, ওই অসুস্থ ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দিতে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই অসম্মতি জানাতে পারবে না।

ওই আদেশে বলা হয়, যদি কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিকে এরকম জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে জরুরি সেবা রয়েছে— এমন নিকটস্থ কোনো হাসপাতালে ওই ব্যক্তিকে পাঠাতে হবে। এছাড়া সব বেসরকারি-সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের তালিকা, জরুরি চিকিৎসাসেবা বিভাগ রয়েছে— এমন হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর পৃথক তালিকা এবং সেসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বর্তমান অবস্থার বিস্তারিত বিবরণসহ একটি তালিকা আগামী তিন মাসের মধ্যে দাখিল করতে বলেছেন আদালত।

হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকে জরুরি চিকিৎসাসেবা না পাওয়া এ রকম কয়েকটি ঘটনার প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও একাডেমি অব ল অ্যান্ড পলিসি (আলাপ) একটি রিট দায়ের করেছিল। এই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত এসব নির্দেশনা দিয়েছেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রাশনা ইমাম। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শামীমা আক্তার ও খন্দকার নীলিমা ইয়াসমিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!