জরিমানার সপ্তাহ পার হতেই ফের বালু উত্তোলন বাঁশখালীতে

শঙ্খ নদীর ১৭ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিতে

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর শঙ্খনদীর পাড়ে পুকুরিয়া ইউনিয়নের একটি গ্রাম বরুমছড়া। নির্বিচারে বালু উত্তেলনের ফলে গ্রামটির শতাধিক ঘর-বাড়ি, ধানি জমি, স্কুল, মাদ্রাসা, হাট-বাজার, মসজিদ তলিয়ে গেছে নদীতে। বসতিভিটাও হারিয়ে অসংখ্য পরিবার আশ্রয় নিয়েছে পাহাড়ে। ভাঙ্গন রোধে ১৭ কোটি টাকায় সিসি ব্লক দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কয়েকদফা অভিযান জরিমানার পরও থামছে না অবৈধ বালু উত্তোলন। জরিমানা করে সপ্তাহ না পেরুতেই আবার বালু উত্তোলন শুরু করেছে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে, পুকুরিয়া ইউনিয়নে গত ১০ বছর ধরে চলছে কোটি টাকার অবৈধ বালু ব্যবসা। ১০টি গ্রুপের একটি সিন্ডিকেট এখানে সক্রিয়। তারা বালু উত্তোলনের সময় সশস্ত্র পাহারা বসিয়ে রাখে। গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার ওই এলাকার জন্য ১৭ কোটি টাকায় সিসি ব্লক দিয়ে চলতি বছরের প্রথমার্ধে বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে। নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলে নবনির্মিত ওই বেড়িবাঁধের বিস্তীর্ণ এলাকার সিসি ব্লক তলিয়ে গেছে শঙ্খ নদীতে। এখন এ বেড়িবাঁধটির অস্তিত্বও ঝুঁকিতে অথচ সিসি ব্লকগুলো বসানো হয়েছিল এ বছরের জানুয়ারি মাসে।

সরেজমিন ঘুরে ও গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, এসব বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে স্থানীয় আব্দুল কাদের, জিয়াউর রহমান, অস্ত্র মামলার আসামি মো. মহিউদ্দিন। প্রতি গাড়ি বালু বিক্রি হয় ৩ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়। গত ৬ জুন ড্রেজার ব্যবসায়ী আব্বাস ও কুদ্দুসকে অবৈধভাবে বালু তোলার অভিযোগে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন বাঁশখালী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতিকুর রহমান। জরিমানার ১ সপ্তাহ পার না হতেই শঙ্খ নদী থেকে আবারও বালু উত্তোলন করে বিক্রয় করছে।
এর আগে গতবছর বালু ব্যবসার কারণে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয় ইউপি সদস্য মুজিবুর রহমানসহ ১০ গ্রুপের বহুমুখি সিন্ডিকেটকে।

গ্রামবাসী আবু নবী, রোকেয়া বেগম, সালাম আলী, তৈয়ব আলী বলেন, ‘বালু খেকোদের প্রশাসন ধাওয়া করলে ১/২ দিন চুপ থাকে। পরে আবারও শুরু হয়ে যায়। গ্রামের কেউ প্রতিবাদ করলে অস্ত্র ঠেকিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এদের মধ্যে মো. মহিউদ্দিনকে র‌্যাব-৭ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করলেও ১ বছরে ছাড়া পায়।

অভিযুক্ত সিন্ডিকেটের একজন ইউপি সদস্য মুজিবুর রহমান। এ বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, আমি অবৈধ বালু ব্যবসা করে গতবছর দেড় লাখ টাকা জরিমানা দিয়েছি এটা সত্য। তবে এরপর থেকে আর বালুর ব্যবসা করছি না। যারা আমার নাম বলছে তারা সত্য বলেনি। এখন কিছু ছাত্রলীগ নেতা ব্যবসা করছে।

এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঁশখালী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতিকুর রহমান বলেন, ‘গ্রামবাসীর অভিযোগ পেয়ে আমি গত সপ্তাহে ওই এলাকায় ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছি। বিষয়টি কঠোরভাবে দমন করা হবে।’

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!