জমির বিরোধে চবি শিক্ষার্থীর পরিবারকে হত্যামামলায় জড়ানোর অভিযোগ কক্সবাজারে

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের অন্তর্গত খরুলিয়া এলাকায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) এক শিক্ষার্থীর বাবা ও চাচাকে হত্যা মামলার আসামি করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী ওই পরিবার।

বুধবার (৩০ জুন) বিকেল সাড়ে পাঁচটায় উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের খরুলিয়ায় নিজ বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ রিয়াজ মোহাম্মদ।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ২৬ জুন বিকাল ৪টার দিকে প্রকাশ্যে দিবালোকে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের খরুলিয়া ঘাটপাড়া এলাকায় ছলিমের দোকানে খরুলিয়া কোনার পাড়া এলাকার মোহাম্মদ ফরিদের ছেলে কফিল উদ্দিন (১৪) ও বাজার পাড়া এলাকার আবু ছৈয়দের ছেলে মোর্শেদ কামাল (২৪) এর মধ্যে ইয়াবা সংক্রান্ত বিষয় কথা কাটাকাটি হয়৷ কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কফিল উদ্দিন মোর্শেদের বুকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। আঘাতের পর চিকিৎসার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নিহত মোর্শেদ কামালের মা মোস্তফা বেগম বাদি হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যেখানে আমার বাবা নুরুল হক ও চাচা সৈয়দুল হককে আসামী করা হয়। মামলায় নুরুল হক ও সৈয়দুল হকের নির্দেশে হত্যাকারী কফিল উদ্দিন মোর্শেদকে হত্যা করেন বলে অভিযুক্ত করেন নিহতের পরিবার। কিন্তু জমি নিয়ে বিরোধের জেরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অন্যায়ভাবে হত্যামামলায় আমার বাবা ও চাচাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

শাহ রিয়াজ বলেন, নিহত মোর্শেদ কামাল সম্পর্কে আমার ফুফাতো ভাই হয়। অর্থাৎ আমার বাবার চাচাতো বোনের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে নিহতের পরিবারের সাথে আমাদের পরিবারের জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। জমি সংক্রান্ত বিরোধ থাকলেও তাদের সাথে আমাদের কোনো প্রকার শত্রুতার সম্পর্ক ছিল না। যার উদাহরণ আমরা একই ভিটায় সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে বসবাস করছি। উক্ত জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে তাদের সাথে আমাদের পরিবারের সাথে কোন অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেনি। গত ২৬ জুনের হত্যাকান্ডের জেরে এলাকার কিছু কুচক্রী মহলের ইন্ধনে নিহতের পরিবার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের জমি দখল এবং আমার বাবা-চাচা এবং আমার পরিবারকে সামাজিকভাবে মান মর্যাদাহানি এবং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিসাধন করার উদ্দেশ্যে হত্যামামলায় অভিযুক্ত করেছেন।

তিনি আরও বলেন, আমার বাবা নুরুল হক খরুলিয়া এলাকার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ খরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন। তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানে ১৯৯৩ থেকে কর্মচারী হিসেবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কর্মরত আছেন। আমার চাচা সৈয়দুল হক একজন রেমিট্যান্সযোদ্ধা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে বিদেশে করছেন। তিনি গতবছর ছুটিতে এসে লকডাউনের কারণে বিদেশে ফেরত যেতে পারেননি। আমার বাবা-চাচাসহ আমাদের পরিবারের কোনো সদস্যই আজ পর্যন্ত সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে যুক্ত নেই এবং কখনও ছিলেন না।

নিহত মোর্শেদের পিতা আবু ছৈয়দ একজন রোহিঙ্গা এবং দীর্ঘদিন যাবৎ ইয়াবা ব্যাবসার সাথে সম্পৃক্ত। এ নিয়ে তার নামে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদকের মামলা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানার একটি মামলাও, যার নম্বর ১০৮/২০২০।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!