ছয় বারের এমপি,দ্বিতীয় দফায় আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য: অভিষিক্ত ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ

মিরসরাই প্রতিনিধি :
চারদিকে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। ব্যানার পোষ্টারে ছেয়ে গেছে অভিনন্দন বার্তায়। রাজপথে আনন্দ মিছিল করেছে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হিসেবে আবারও স্বীকৃতি পেলেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

 

রবিবার ঘোষিত হয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের নবনির্বাচিত সদস্যদের নাম। ঘোষিত এ কমিটিতে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সংগঠনটির শীর্ষ অবস্থান প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন চট্টগ্রামের কৃতী সন্তান ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। minister-pic

 

চট্টগ্রামের রাজনীতিতে মোশাররফের গুরুত্ব আবারও  প্রকাশ হলো নতুন এ নির্বাচনের মাধ্যমে। চট্টগ্রামের প্রবীণ নেতাদের তুলনায়ও মোশাররফ হোসেনকে মূল্যায়নের মাধ্যমে শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের রাজনীতি যে নিয়ন্ত্রণ করবেন মোশাররফ হোসেনই- তারও ইঙ্গিত দেওয়া হলো।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের দ্বিতীয় ও শেষ দিন দলটির শীর্ষ পদে মনোনীতদের নাম প্রকাশ করা হয়। এ সময় প্রকাশ হয় দলটির ১৭ প্রেসিডিয়াম সদস্যের ১৪ জনের নাম। বাকি তিনটি পদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকাশ করেননি। এছাড়াও নতুন সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।

 

শেখ হাসিনার আস্থাভাজন মোশাররফ হোসেন কোনোরকম দোটানা ছাড়াই আবারও প্রেসিডিয়াম সদস্যদের তালিকায় স্থান করে নেন। মোশাররফ হোসেন একাধারে দক্ষ সংগঠক ও নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিবিদ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত তৃৃণমূল পর্যায়ের এই নেতার সঙ্গে স্থানীয়দের আত্মিক সম্পর্ক। ক্রমশই চট্টগ্রাম জেলার রাজনীতিতে তাঁর প্রয়োজন ও গুরুত্ব প্রকাশিত হয়। প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে টানা দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হওয়া তাঁর অবস্থানকে আরও সুসজ্জিত করলো।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ হোসেন ১৯৪৩ সালের ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ধুম গ্রামের এক স¤্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পাস করেন। ১৯৭২ সালে স্যার আশুতোষ কলেজ থেকে তিনি এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬৬ সালে লাহোরের ইঞ্জিনিয়ারিং ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি সম্পন্ন করেন তিনি।

 

তাঁর তিন ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছেন। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে থাকা মোশাররফ হোসেন লাহোরে পড়ার সময়সহ পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সভাপতি হন ৬ বার। পড়াশোনা শেষ করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ২৭ বছর বয়সে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তাঁর এ সাফল্যযাত্রা এখনও চলছে। স্থানীয়দের আস্থার প্রতীক হয়ে বার বারই জাতীয় সংসদে করেছেন এলাকার প্রতিনিধিত্ব।

 

প্রথম এমপি নির্বাচিত হন মুক্তিসংগ্রামের আগের বছর ১৯৭০ সালে। সেবার চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) থেকে নির্বাচিত হন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪- এ ছয়বার একই আসন থেকে নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ১৯৯৬ সাল থেকে টানা চার জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই নির্বাচিত হন এ জনপ্রিয় নেতা।

 

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন এবং গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। নবম সংসদে কৃতিত্বের সঙ্গে পালন করেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব। মুক্তিযুদ্ধে তিনি সেক্টর-১-এর সাব- সেক্টর কমান্ডার ছিলেন।

 

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনে এ প্রতিবেদককে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। তার কর্মী হিসেবে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল। জাতির জনকের আর্দশকে লালন করেছি শৈশব থেকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাজ করে যাবো। মিরসরাইবাসী ভোট দিয়ে ৬ বার এমপি নির্বাচিত করেছেন আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডিয়াম সদস্য পদটি আমাকে উপহার দিয়েছেন দলের তথা জনগনের কল্যানে কাজ করার জন্য।

 

রিপোর্ট : ইলিয়াছ রিপন, মিরসরাই প্রতিনিধি :

এ এস / জি এম এম / আর এস পি :::

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!