তসলিমা নাসরিন : বাংলাদেশের কোনও এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র একুশ বছর বয়সী আশেকুর রহমান সিরিয়ায় গেছে আইসিসে যোগ দিতে। ওখানে মানুষ মারার ট্রেইনিং নেবে। মানুষ মারার ট্রেইনিং তো বাংলাদেশেই দেওয়া হচ্ছে। অত দূর পথ পাড়ি দেওয়ার কী দরকার পড়েছিলো?
যে কাজটা দেশেই সম্ভব, সে কাজটা করতে বিদেশ বিভুঁইয়ে যাওয়ার তো কোনও প্রয়োজন নেই। আইসিসরা তো বাংলাদেশি বা ভারতীয় মুসলমানদের মানুষ মারার কাজ না দিয়ে টয়লেট পরিস্কার করার কাজ দেয়। কিছু মুসলমান তো এ কারণে রাগ করে পালিয়ে এসেছে। তারা টয়লেট পরিস্কার করতে চায় না, তারা মানুষ মারতে চায়।
বুদ্ধি থাকলে দেশি ছেলেরা বুঝতো যে, মানুষ মারার কাজ দেশে বরং বুক ফুলিয়ে করা যায়। দেশপ্রেম বলেও তো একটা ব্যাপার আছে। তাছাড়া ধরা পড়ার আশংকা নেই। শত্রুদের এয়ার অ্যাটাকে আহত হওয়ারও ঝামেলা নেই। আইসিসদের মারার জন্য ওৎ পেতে আছে ইউরোপ/আমেরিকা, এই সমস্যাটা বাংলাদেশে নেই। ইউরোপ/আমেরিকা বাংলাদেশের মতো গরিব দেশের গরিব সন্ত্রাসী মারার ব্যাপারে মোটেও উৎসাহী নয়। ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ করতে কে চায়!
সে কারণেই বলি, আল্লাহর নামে মানুষ মারার জন্য বাংলাদেশের মতো নিরাপদ জায়গা আর নেই বললেই চলে। সবচেয়ে বড় যে সুবিধে বাংলাদেশে, সেটা হলো, এখানে প্রধানমন্ত্রী, পুলিশ বাহিনী, রাজনৈতিক/অরাজনৈতিক ইসলামি দল, নিরব জনগণ — সবাই একরকম পক্ষেই আছে। কারণ, যতই হোক, হত্যাটা তো হালাল হত্যা, পরম করুণাময় আল্লাহর নামে হত্যা। ফেসবুক থেকে