ছিনতাই চুরির সঙ্গে গুলিয়াখালী সৈকতে চলে দেহব্যবসাও

অসাধারণ সৌন্দর্য্য নষ্ট হচ্ছে অবহেলায়

ছিনতাই, চুরি, জুয়া ও দেহব্যবসার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে সীতাকুণ্ডের পর্যটন সম্ভাবনাময় গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত। স্মার্ট ফোন, ক্যামেরা ও নগদ অর্থ ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রায় ঘটছে। সৈকতের দোকানে গভীর রাতে বসে জুয়া ও দেহব্যবসা। এছাড়া পর্যটকদের নিরাপত্তায় নেই কোনো উদ্যােগ।

জানা গেছে, সারাদেশ থেকে প্রতিদিন অন্তত ১০ হাজার পর্যটক আসে এই গুলিয়াখালী সৈকতে। পর্যটকদের যাতায়াতে যেমন কোনো সুব্যবস্থা নেই, তেমনি তাদের নিরাপত্তায় নেই কোনো উদ্যোগ। সন্ধ্যার আগে সাগরপাড় থেকে ফিরে না আসলে ছিনতাইয়ের কবলে পড়তে হচ্ছে পর্যটকদের। স্মার্টফোন, ক্যামেরা ও নগদ অর্থ ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এছাড়া সৈকতে গড়ে উঠা দোকানে গভীর রাতে বসে জুয়া ও পতিতার আসর।

পুলিশ কয়েকবার হানা দিলেও আটক করতে পারেনি কাউকে। কারণ হিসেবে সীতাকুণ্ড মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক জানান দূরত্বের কথা। বেড়িবাঁধ থেকে সাগর পাড়ে গড়ে উঠা দোকানপাঠের দূরত্ব অন্তত ২ কিলোমিটার। তাছাড়া এই পথে সারাবছর কাদা থাকার কারণে আস্তানায় পৌঁছানোর আগেই টের পেয়ে গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যায় তারা। যার ফলে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করেও কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। সঠিক উদ্যোগ নিলে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত পর্যটনের অপার সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে মনে করেন তিনি।

ছিনতাই চুরির সঙ্গে গুলিয়াখালী সৈকতে চলে দেহব্যবসাও 1

তবে মানুষ যত্ন না করলেও প্রকৃতি দুই হাতে ঢেলে দিয়েছে গুলিয়াখালীকে। সৈকত বলতে সচরাচর যে ছবি আমাদের মনে ভেসে উঠে এটি তার থেকে আলাদা। এই সৈকতের অপরূপ অকৃত্রিম সৌন্দর্য সবাইকে অভিভূত করে। সৈকতে যাওয়ার রাস্তার দুই পাশেও রয়েছে অসাধারণ সৌন্দর্য।

সবুজের মাঝ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দিগন্ত জোড়া জলরাশি ও কেওড়া বন অভিভূত করে পর্যটকদের। পাশ্ববর্তী খালের অন্য পাশে রয়েছে গভীর জঙ্গল, সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়লেই যেখান থেকে শিয়াল ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর চিৎকার ভেসে আসে। তবে পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি টানে সৈকতের অসমতল ভূমি যে ভূমির মাঝ দিয়ে একেঁ বেকেঁ ঢুকে গেছে সমুদ্র। চারদিকে সবুজ ঘাস আর তার মাঝে সাগরের পানিতে পরিপূর্ণ ছোট-ছোট নালা যা এই সৈকতকে এনে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা। চাইলে যেকোন সময় ঘুরে দেখে আসতে পারেন অপরুপ এই সৈকতে। তবে অবশ্যই সন্ধ্যা নামার আগেই সাগর পাড় থেকে উঠে আসতে হবে।

গুলিয়াখালির সৌন্দর্য দেখে অভিভূত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী গুলশান আরা বলেন, এখানে না আসলে বোঝা যায় না কতটা সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে গুলিয়াখালী সৈকতে।

চট্টগ্রাম শহর থেকে আসা জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নুরুল আলম বলেন, গুলিয়াখালী সড়ক সংস্কার ছাড়াও উন্নয়নমূলক কিছু পদক্ষেপ নিলে অনন্য পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে এটিকে গড়ে তোলা সম্ভব।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!