ছাত্রলীগ নেত্রীর ঝুলন্ত লাশ, সুইসাইড নোট উদ্ধার—স্বামী পলাতক

রাজধানীতে খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য নিবেদিতা রোয়াজা সোনিয়া ওরফে নুসরাতের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (১২জুন) রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানার আগারগাঁও সচিবালয় বি-২ নম্বর কোর্য়াটারের একটি বাসা থেকে নিবেদিতার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারের পর লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়। এসময় নিবেদিতার লাশের পাশে একটি সুসাইড নোট পাওয়া যায় বলে জানায় পুলিশ। কিন্তু তদন্ত চলমান থাকায় সুসাইড নোটে কি লেখা ছিল তা জানাতে অপারগতা জানান তদন্তে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তা।

নিহত ছাত্রলীগ নেত্রী খাগড়াছড়ি জেলার ঠাকুরপাড়া গ্রামের রত্নাকান্দি রোয়াজার মেয়ে। নিবেদিতার স্বামীর নাম মিল্লাত মামুন। প্রাথমিক অবস্থায় মামুনের সম্পূর্ণ পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে মামুন পলাতক আছেন বলে জানায় শেরে বাংলা নগর থানা পুলিশ।

২০১৯ সালে ধর্মান্তরিত হয়ে মামুনকে বিয়ে করেন নিবেদিতা। জানা যায়, বিয়ের সময় প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন স্বামী মামুন। সে নিজেকে ৩৮তম বিসিএস এ সদ্য নিয়োগ পাওয়া পুলিশ কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেন। কিন্তু বিয়ের পর তা মিথ্যা প্রমাণ হলে এটা নিয়ে প্রায়ই দুইজনের মধ্যে মধ্যে ঝগড়া হতো।

এ ব্যাপারে শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম মুন্সি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, সচিবালয় কর্মচারী আবাসিক এলাকা থেকে এক নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করি আমরা। লাশটির পাশে আমরা একটি সুসাইড নোট হাতে পেয়েছি। প্রথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি আত্মহত্যা।

তিনি বলেন, ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর ঘটনার কারণ জানা যাবে, ঘটনার পর থেকে নিহত নিবেদিতার স্বামী মামুন পলাতক আছে, তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

পুলিশ এই ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বললেও নিবেদিতার আত্মীয় স্বজন এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করছেন। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিবেদিতার নিহতের ঘটনা নিয়ে তার সহকর্মীরা এটাকে হত্যাকাণ্ড দাবি করে নিহতের স্বামী মামুনের বিচার দাবি করছেন।

জানা যায়, খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রলীগের সদস্য থাকাকালীন মিল্লাত মামুনের সাথে প্রেম হয় নিবেদিতার। তারপর সনাতন ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে পরিবারের অনিচ্ছায় বিয়ে করে ঢাকায় স্বামীর সাথে স্থায়ীভাবে থাকতে শুরু করেন।

খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক জহির উদ্দিন ফিরোজ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, নিবেদিতা আমার কমিটির সদস্য ছিলো, বেশ ভালো মেয়ে ছিলো, কিন্তু বিয়ের পর সে ঢাকায় চলে যায়, আজ ওর মৃত্যুর খবর শুনে বেশ কষ্ট পেয়েছি। এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা আমরা সঠিক জানি না। তবে যদি হত্যা হয়ে থাকে তবে অবশ্যই এটার সুষ্ঠু বিচার করতে হবে।

বিএস/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!