ছাত্রলীগের কমিটিতে ৬৮ নতুন মুখ, চারজন শুধু চট্টগ্রামের

নানা অভিযোগে অভিযুক্ত ৩২ নেতা-নেত্রীকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার এক বছর পর এবার কমিটিতে যুক্ত করা হল নতুন ৬৮ জনকে।

রোববার (৩১ জানুয়ারি) ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক সাংগঠনিক নির্দেশপত্রে কমিটিতে নতুন করে ৬৮ জন নেতা-নেত্রীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

নতুন অন্তর্ভুক্ত হওয়া ৬৮ জনের মধ্যে অন্তত চারজন চট্টগ্রামের। এর মধ্যে মিরসরাইয়ের বাসিন্দা রায়হান কায়সারকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সভাপতি করা হয়েছে। অন্যদিকে উপ পাঠাগার সম্পাদকের পদ পেয়েছেন আনোয়ার হোসেন। তার বাড়ি চকরিয়ায়।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ওমর ফারুক নতুন কমিটিতে পেয়েছেন সহ-সভাপতির পদ।

এছাড়া চুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ ইমাম বাকের পাঠাগার সম্পাদক হয়েছেন।

ছাত্রলীগের কমিটিতে ৬৮ নতুন মুখ, চারজন শুধু চট্টগ্রামের 1
ছাত্রলীগের কমিটিতে ৬৮ নতুন মুখ, চারজন শুধু চট্টগ্রামের 2
ছাত্রলীগের কমিটিতে ৬৮ নতুন মুখ, চারজন শুধু চট্টগ্রামের 3

কমিটিতে নতুন পেলেন যারা
সহ-সভাপতি পদ পেয়েছেন— মো. সাইফ উদ্দিন বাবু, সাগর হোসেন সোহাগ, রায়হন কাওসার, রাকিব হোসেন, রানা হামিদ, আনন্দ সাহা পার্থ, শেখ সাগর আহমেদ, শুভ্রদেব হালদার, দেবাশীষ সিকদার সিদ্ধার্থ, আরিফ ইবনে আলী, আরিফ হোসেন রিফাত, জিয়াসমিন শান্তা, তিলোত্তমা শিকদার, শাহরিয়ার সিদ্দিকী শিশিম, ফরিদা পারভীন, উৎপল বিশ্বাস, মো. ওমর ফারুক, মিজানুর রহমান পিকুল, মুরাদ হায়দার টিপু, ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী সজীব, রাকিবুল হাসান নোবেল, খাদিজাতুল কুবরা, মো. মহিন উদ্দিন, রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য এবং জেসমিন আরা রুমা।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আব্দুল জাব্বার রাজ, দপ্তর সম্পাদক পদে ইন্দ্রনীল দেব শর্মা রনি, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মেহেদি হাসান সানি, পাঠাগার সম্পাদক পদে সৈয়দ ইমাম বাকের, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে খন্দকার জামি উস সানি, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক পদে তুহিন রেজা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা বিষয়ক সম্পাদক পদে খালিদ মাহমুদ ফয়সাল, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক পদে আল-আমিন রহমান, উপ-প্রচার সম্পাদক পদে ফেরদৌস মাহমুদ পলাশ, উপ-দপ্তর সম্পাদক পদে সজীব নাথ ও মিরাজুল ইসলাম খান শিমুল, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে তন্ময় দেবনাথ ও আমান উল্লাহ আমান, উপ-সংস্কৃতি সম্পাদক পদে মো. মোর্শেদুর রহমান আকন্দ, শেখ নাজমুল ও মো. মাইনুল হাওলাদার, ইসমাইল হোসেন, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক পদে তানভীর হাসান সৈকত, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে সামাদ আজাদ জুলফিকার, উপ-পাঠাগার সম্পাদক পদে এম আর মুকুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেন, উপ-তথ্য ও গবেষণা পদে মো. আব্দুর রশিদ (রাফি), উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. আতিকুল ইসলাম (আতিক), উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে শাহেদ খান, উপ-তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে এহসান পিয়াল, উপ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াহিদ খান রাজ, উপ-স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক সম্পাদক পদে রাজেশ বৈশ্য, জেরিন শিকদার, সাধন বিশ্বাস ও মো. রিজভান আহমেদ, উপ-ছাত্রবৃত্তি সম্পাদক পদে মাহফুজুর রহমান, উপ-কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক পদে শাহজাহান ভূঁইয়া শামীম।

এর আগে ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর বিতর্কিত ও গঠনতন্ত্রবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩২ নেতাকে কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাদের ২১ জনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় কমিটির কিছু নেতার তোলা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, আর ১১ জন পদ থেকে অব্যাহতি নিতে নিজেরাই আবেদন করেছিলেন।

অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ছাত্রলীগের কমিটি থেকে বাদ পড়া ২১ নেতা-নেত্রী হলেন সহসভাপতি তানজিল ভূঁইয়া, আরেফিন সিদ্দিক, আতিকুর রহমান খান, বরকত হোসেন হাওলাদার, শাহরিয়ার কবির, সাদিক খান, সোহানী হাসান, মুনমুন নাহার, আবু সাঈদ, রুহুল আমিন, রাকিব উদ্দিন, সোহেল রানা, ইসমাইল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক আহসান হাবীব, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক তাজ উদ্দীন, উপদপ্তর সম্পাদক মমিন শাহরিয়ার ও মাহমুদ আবদুল্লাহ বিন মুন্সী, সংস্কৃতিবিষয়ক উপসম্পাদক বি এম লিপি আক্তার ও আফরিন লাবণী, সহসম্পাদক সামিয়া সরকার ও রনি চৌধুরী।

আর নিজ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কমিটি থেকে বাদ পড়া ১১ নেতা-নেত্রী হলেন সহসভাপতি এস এম তৌফিকুল হাসান, আমিনুল ইসলাম, বি এম শাহরিয়ার হাসান, হাফিজুর রহমান, এস এম হাসান আতিক, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক শাহরিয়ার ফেরদৌস, স্বাস্থ্যবিষয়ক উপসম্পাদক রাতুল সিকদার ও শাফিউল সাজীব, উপপ্রচার সম্পাদক সিজাদ আরেফিন, পাঠাগারবিষয়ক উপসম্পাদক রুশী চৌধুরী এবং সহসম্পাদক আঞ্জুমানারা অনু।

ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি প্রকাশের প্রায় ১০ মাস পর ২০১৯ সালের ১৩ মে সংগঠনটির ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেদিন সন্ধ্যায় কমিটিতে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা তাদের ওপর হামলা চালান।

এতে সংগঠনের কয়েকজন নারী নেতাসহ ১০-১২ জন আহত হন। এরপর বিতর্কিতদের বাদ দেওয়াসহ চার দফা দাবিতে কয়েক দফায় অবস্থান কর্মসূচি ও অনশন করেন পদবঞ্চিতরা।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!