ছাত্রদলের ৫ নেতা কারাগারে

৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

চট্টগ্রাম নগরীর নগর বিএনপির কার্যালয় নাসিমন ভবন চত্বর থেকে আটক হওয়া ছাত্রদলের ৫ নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) নাশকতা ও পুলিশের কাজে বাধাদানের অভিযোগে কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলায় পুলিশ তাদের মহানগর ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে আটক হওয়া ছাত্রদলের নেতাদের আমরা আদালতে সোপর্দ করেছি। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

আদালত সূত্র জানায়, পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলো। আদালত রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছে ২ ফেব্রুয়ারি (রোববার)।

নগর ছাত্রদল নেতা সামিয়াত আমিন জিসান জানান, নগর বিএনপির কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্রীয় কমিটির ৪ সদস্যের টিমের সাথে বিকেল থেকে মতবিনিময় করেন নগর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। ওই সভায় নগর ছাত্রদলের ১০১ জন নেতাকর্মী বক্তব্য রাখেন। নগর ছাত্রদলের সাথে কেন্দ্রীয় টিমের মতবিনিময় শেষ হওয়ার পর দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শহীদুল আলম শহীদের নেতৃত্বে ৪ নেতা কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে বসছিলেন। এরপরই পুলিশ অতর্কিত গুলি চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে, লাঠিচার্জ করে। এতে আমাদের নগর সভাপতি গাজী সিরাজ উল্লাহসহ ১২ থেকে ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন। মাঈন উদ্দিন শহীদ গুলিবিদ্ধ হন। ৫ জনকে আটক করে নিয়ে যায়। উল্টো পুলিশ বাদি হয়ে আমাদের ৩৫ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করেছে।

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া ও পুলিশের সাথে মারামারি এবং নাশকতা সৃষ্টির ঘটনায় ৫ জনকে আটক দেখিয়ে মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। উদ্ধার দেখানো হয়েছে ২টি তাজা ককটেল, ৪টি বিস্ফোরিত ককটেলের অংশ বিশেষ, ১৫টি ভাঙ্গা ইটের টুকরো, ৪টি কাঠের বাটাম ও ১০টি বাঁশের লাঠি।

ঘটনাস্থল থেকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক এবিএম মাহমুদ আলম সরদার, সহসম্পাদক মাঈন উদ্দিন নিলয়, নগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলুসহ ৫ জনকে আটক করে পুলিশ।

নগর ছাত্রদলের সভাপতি গাজীর সিরাজ উল্লাহ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচএম রাশেদ খান, যুবদলের সহ-সভাপতি ফজলুল হক সুমন, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোশারফ হোসাইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, যুগ্ম সম্পাদক আলী মর্তুজা, পাঁচলাইশ থানা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য শেখ রাসেল, নগর ছাত্রদল নেতা মহসিন কবির আপেল, সামিয়াত আমিন জিসানসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের তৃণমূল ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করতে ২৪ জানুয়ারি রাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি মোসাদ্দেক সাফির নেতৃত্বে ৪ সদস্যের টিম চট্টগ্রাম আসেন। প্রতিনিধিদলের অপর তিন সদস্য হলেন- যুগ্ম সম্পাদক এবিএম মাহমুদ আলম সরদার, সহসম্পাদক মাঈন উদ্দিন নিলয় এবং সহসাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগ) ফারুক আহমেদ সাব্বির। সাফি ও সাব্বির ছাড়া অপর দুইজন আটক হলেন পুলিশের হাতে।

প্রতিনিধি দল প্রথম দিন (২৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাথে বৈঠক করে। ২৬ জানুয়ারি বিরতি দিয়ে ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাথে বসেছিল। বৈঠক শেষে নিজ দলের নেতাকর্মীদের হাতে আহত হন উত্তর জেলা সভাপতি জাহেদুল আফসার জুয়েল।

২৮ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের সাথে তারা বৈঠক শেষ করে দক্ষিণ জেলা নেতাদের সাথে বসার পরই আটক হন দুই কেন্দ্রীয় নেতা। এই ঘটনার পর চট্টগ্রাম ছাত্রদলের কমিটি গঠন অনিশ্চয়তায় পড়লো বলে জানান ছাত্রদলের নেতারা।

এফএম/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!