চোখের পলকেই উঁচু ভবন বাইতে পারে চোর ‘মালিঙ্গা’

তিনি দিনের বেলা পাগল বেশে ঘুরে বেড়ান আর রাত হলেই নেমে পড়েন চুরি করতে। চোখের পলকেই যে কোন উঁচু ভবনে উঠে যাওয়ার কৌশল তার জানা। পাইপ বেয়ে জানালার গ্রিল ভেঙ্গে অথবা রান্নাঘর বা বাথরুমের এক্সস্ট ফ্যান ভেঙ্গে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে চুরির কাজ ভালভাবেই সেরে নিতে পারেন। তার চুরির ধরনও বেশ চমকপ্রদ। চুরি থেকে বাদ পড়েনি জজ বা পুলিশের বাসাও।

ইনি শ্রীলংকান ক্রিকেটার লাসিথ মালিঙ্গা নন, চোর মালিঙ্গা। দুই সঙ্গীসহ নগরের কোতোয়ালী থানা পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন এই ‘মালিঙ্গা’।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মালিঙ্গার পুরো নাম আনোয়ার হোসেন মালিঙ্গা (২১)। বাড়ি নোয়াখালী। গ্রেপ্তার হওয়া অন্য দুজন হলেন কুমিল্লার মুরাদনগর থানার মৃত রেনু মিয়ার ছেলে মাছুম আলী (১৯) ও ব্রাহ্মনবাড়িয়ার সরাইল থানার লকু মিয়ার ছেলে জিল্লুর রহমান (১৮)।

কোতোয়ালী থানা পুলিশের হাতে আটক ‘মালিঙ্গা’র দুই সঙ্গী
কোতোয়ালী থানা পুলিশের হাতে আটক ‘মালিঙ্গা’র দুই সঙ্গী

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মালিঙ্গা চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানাধীন বগার বিলের বাসিন্দা। স্থানীয় এক ‘বড় ভাই’য়ের ছত্রচ্ছায়ায় চুরি করেন তিনি। চুরির পর এসব মালামাল জমা দেওয়া হয় ওই বড় ভাইকে। শুধু মালিঙ্গাই নয়, কৈশোর পার হওয়া একদল তরুণকে দিয়ে শহরজুড়ে এই চুরির কাজ করান কথিত ‘বড় ভাই’।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাতে দুই সহযোগীসহ নিউ মার্কেট এলাকা থেকে কোতোয়ালী পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে মালিঙ্গা। নিয়মিত চুরি করার কথা স্বীকার করে ও চুরির কৌশল তুলে ধরে বুধবার (২১ আহস্ট) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার জাহানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘নিউমার্কেট এলাকা থেকে চুরির সরঞ্জামাদিসহ মালিঙ্গা ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় চুরির ঘটনা ঘটিয়ে আসছিলেন। মালিঙ্গা গত দুই মাসে চুরি করে নগরীর কাজীর দেউড়ি, ব্যাটারি গলি, আলমাস মোড়, আসকার দিঘীর পাড়, হাজারী লেইন, দেওয়ান বাজার, টেরিবাজার, দিদার মার্কেটসহ কোতোয়ালীর বাইরে অসংখ্য এলাকায়। বাদ দেয়নি জজের বাসা, পুলিশের বাসা, বড় কর্তাদের বাসাও। উঠে এসেছে রাজনৈতিক প্রশ্রয়দাতা কথিত বড় ভাইয়ের নামও।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মালিঙ্গা জানিয়েছে, বাকলিয়ার শান্তিনগর বগারবিলের এক ‘বড় ভাইয়ের’ আশ্রয়ে গত ৩-৪ বছর ধরে চুরিই তার পেশা৤ চুরি করে যা পাওয়া যেতো সব কিছুই বড় ভাইকে জমা দেওয়ার পর একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দেয়া হতো তাকে৷ তবে প্রতি রাতে চুরি করেন না মালিঙ্গা৷ একটি চুরির পর দুয়েকদিন বিরতি দিয়েই আবার চুরিতে নামতেন৤

ওসি বলেন, আশ্রয়দাতা বড় ভাইসহ এই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান চালানো হচ্ছে। আশা করি তারাও গ্রেপ্তার হবে।

এইচটি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!