চুয়েটের ‘পুষ্টি বার’ জিতে নিল ‘হাল্ট প্রাইজ অন ক্যাম্পাস’

খেতে পারবে সব বয়সীরা

সচরাচর হাতের কাছে পাওয়া যায়— এমন সব উপাদান দিয়ে ‘পুষ্টি-বার’ নামে একটি বিশেষ খাবার উদ্ভাবন করে ‘হাল্ট প্রাইজ অন ক্যাম্পাস’ রাউন্ডে চ্যাম্পিয়নের পুরস্কার জিতেছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) চার শিক্ষার্থী।

পুষ্টিমানসমৃদ্ধ এই বিশেষ খাবারটি তিন বছর বয়স থেকে শুরু করে সব বয়সের লোকই খেতে পারবে। এটি মূলত গুড়, মুড়ি, বাদাম, ড্রাই ফ্রুটস, তিল, নারকেল এসবের সমন্বয়ে তৈরি।

অপুষ্টি বা পুষ্টিহীনতা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ানক সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রায় দুই বিলিয়ন মানুষ বর্তমানে পুষ্টিহীনতায় ভুগছে এবং এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। তৃতীয় বিশ্বের দেশে যেসব সমস্যা বেশি দেখা যায় তা হলো পুষ্টিকর খাদ্যের অভাব। এর সাথে আরো রয়েছে স্বাস্থ্যকর এবং মানসম্মত খাদ্যের অভাব। তাই সেই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যেই এবার এলো ‘পুষ্টি-বার’।

জুশান আব্দুল্লাহ, নুসরাত জাহান রিদন, সুস্মিত কুন্ডু ও মহসিনা ইসলাম তটিনী— এই চারজন মিলে ‘পুষ্টি-বার’-এর ধারণাটি এবারের হাল্ট প্রাইজে উপস্থাপন করেছেন।
জুশান আব্দুল্লাহ, নুসরাত জাহান রিদন, সুস্মিত কুন্ডু ও মহসিনা ইসলাম তটিনী— এই চারজন মিলে ‘পুষ্টি-বার’-এর ধারণাটি এবারের হাল্ট প্রাইজে উপস্থাপন করেছেন।

বলছিলাম চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) অনুষ্ঠিত হাল্ট প্রাইজ অন ক্যাম্পাস রাউন্ডের (২০২০-২১ সেশন) ‘টিম ইনভিসাজ কো’ এর কথা। পুষ্টিহীনতা সমস্যা সমাধানের চিন্তা থেকেই ‘পুষ্টি-বার’ এর ধারণাটি উপস্থাপন করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে দলটি।

কী এই ‘পুষ্টি-বার’?
এটি একটি এনার্জি বার— যাতে রয়েছে সুষম খাদ্যের জন্য দরকারি সকল উপাদান। যা সাশ্রয়ী দামে স্থানীয় পণ্য দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সব বয়সের মানুষের পুষ্টি নিশ্চিতের লক্ষ্যে এই পণ্যটি নিয়ে কাজ শুরু করা হয় বলে এর নামকরণও করা হয় ‘পুষ্টি-বার’।

শুরুর গল্প
জুশান আব্দুল্লাহ, নুসরাত জাহান রিদন, সুস্মিত কুন্ডু ও মহসিনা ইসলাম তটিনী— এই চারজন মিলে ‘পুষ্টি-বার’-এর ধারণাটি এবারের হাল্ট প্রাইজে উপস্থাপন করেছেন। তারা জানান, তাদের চার জনের মধ্যেই মানুষের জন্য কিছু করার আকাঙ্ক্ষা আগে থেকেই ছিল। ঘটনাক্রমে এবার হাল্টের চ্যালেঞ্জের সাথে তাদের পরিকল্পনা মিলে যায়। আর এভাবেই এটি তারা শুরু করেন।

‘পুষ্টি-বার’ তৈরির উপাদান
এটি মূলত গুড়, মুড়ি, বাদাম, ড্রাই ফ্রুটস, তিল, নারকেল এসবের সমন্বয়ে তৈরি। ‘পুষ্টি-বার’-এর সকল উপকরণ হবে চালভিত্তিক এবং অন্যান্য স্থানীয়ভাবে উৎপন্ন সবজি। ‘টিম ইনভিসাজ কো’র সদস্যরা জানান, প্রাথমিকভাবে যেহেতু এটি তারা নিজেরা তৈরি করেছেন, সেজন্য ১-২ ঘন্টার মতো সময় লেগেছে। কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে এটি তৈরি করলে আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করার কারণে অনেক অল্প সময়ের মধ্যেই বেশি পরিমাণে এই বারটি তৈরি করা যাবে।

চুয়েটের ‘পুষ্টি বার’ জিতে নিল ‘হাল্ট প্রাইজ অন ক্যাম্পাস’ 1

যাদের জন্য তৈরি ‘পুষ্টি-বার’
তিন বছর বয়স থেকে শুরু করে সব বয়সের ছেলেমেয়েরা এটি খেতে পারবে। শিশু-কিশোররা সচরাচর মিষ্টিজাতীয় ক্যান্ডি ইত্যাদি পছন্দ করে থাকে। এজন্য খাদ্যবিক্রয় প্রতিষ্ঠানসমূহ বিভিন্ন ধরনের মিষ্টিজাতীয় খাদ্য যেমন ওয়েফার, বার, ক্যান্ডি ইত্যাদিতে বাজারজাত করে থাকে। কিন্তু এসব খাবারের অধিকাংশই ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) এবং আন্তর্জাতিক পুষ্টি গবেষণা সংস্থা থেকে অস্বাস্থ্যকর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই দলের সদস্যরা জানান, ‘আমরা সকলের কাছে উপস্থাপন করতে চাই একটি নতুন পণ্য ‘পুষ্টি-বার’। এটি শিশুকিশোরদের হাতে পুষ্টিসমৃদ্ধ এবং ভেজালবিহীন খাদ্যের উৎস তুলে দেবে।’

‘পুষ্টি-বার’ এর গুণাগুণ
যেহেতু এই এনার্জি বারে রয়েছে সুষম খাদ্যের জন্য দরকারি সকল উপাদান, তাই পুষ্টি গুণাগুণও সেভাবেই পাওয়া যাবে। এটি শিশু-কিশোরদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করবে এবং সুস্বাদু হওয়ায় তারা পছন্দও করবে বলে আশা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে এটি কৃষি-অর্থনীতির জন্যও সহায়ক হবে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!