চুরির অপবাদে মা শিশু ছেলেকে নারকীয় নির্যাতন, যৌনাঙ্গে মরিচের গুঁড়ো

কক্সবাজারের চকরিয়ায় চুরির অপবাধ দিয়ে চার বছর বয়সী শিশু-মা ও ছেলেকে তিনদিন ধরে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১৮ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে পৌরসভার ছয় নম্বর ওয়ার্ড পালাকাটা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারের পর তাদের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে উদ্ধারের পর চুরির মামলায় আসামি হওয়ায় তিনজনকে আদালতে নেওয়া হলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

নির্যাতিতরা হলেন চকরিয়া পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ড কোচপাড়ার মো. রফিকের স্ত্রী রশিদা বেগম (৩২), তার ছেলে মো. রিপন (১৬) ও মেয়ে রাজিয়া বেগম (৪)।

নির্যাতিত রশিদা বেগম বলেন, আমার ছেলে রিপন চকরিয়া পৌর বাস টার্মিনাল এলাকায় আমড়া বিক্রি করে সংসার চালায়। টার্মিনাল এলাকায় গত দেড় মাস আগে আয়ুব আলীর মালিকানাধীন একটি কুলিং কর্নার চুরি হয়। গত শুক্রবার সকালে উখিয়ায় খালার বাড়িতে আমার ছেলে রিপন বেড়াতে যায়। আয়ুব আলীসহ পাঁচজন লোক ওইদিন বিকালে রিপনকে চুরির অপবাদ দিয়ে হাত বেঁধে ও মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে সিএনজি যোগে চকরিয়ার পালাকাটায় নিয়ে যায়। সেখানে আয়ুব আলীর বাড়ির একটি কক্ষে আটকে রেখে ছেলেকে বেধড়ক মারধর করে। পরে মোবাইলে আমাকে খবর দিলে আমি ও আমার চার বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে আমাদেরও আটকে রাখা হয়। তিনদিন আটকে রাখার পর পালাক্রমে ১০-১২ জন নারী-পুরুষ আমাদের ব্যাপক মারধর করে। গাছের বাটাম দিয়ে ও বৈদ্যুতিক তার দিয়ে আমার সমস্ত শরীর তেঁতলিয়ে দেওয়া হয়। হাত-পা বেঁধে আমার যৌনাঙ্গে মরিচের গুঁড়া ঢুকিয়ে দেন।

নির্যাতনের সময় আমার চার বছরের মেয়েকে আমার কাছ থেকে একদিন আলাদা করে রাখে তারা। ঠিকমতো খাবারও দেওয়া হয়নি। আমাদের নির্যাতানের ছবি মোবাইলে ধারণ করে চুরির বিষয়ে স্বীকারেক্তি আদায় করেন। পরে তিনশত টাকার স্ট্যাম্পে দস্তখতও নেওয়া হয়।

অপরদিকে সোমবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে মো. হারুনর রশীদ নামের এক ব্যক্তি বাদি হয়ে মা ও ছেলেকে আসামি করে থানায় একটি চুরি মামলা দায়ের করেছেন।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, মা-ছেলেকে অবরোদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। মা-ছেলের বিরুদ্ধে একটি চুরির মামলা হয়েছে। এছাড়া তাদের আটকে রেখে মারধরের বিষয়েও একটি মামলা হয়েছে। মা-ছেলেকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!