চির নিদ্রায় পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রথম একুশে পদকপ্রাপ্ত মংছেনচীং

ফুলেল শ্রদ্ধায় চির নিদ্রায় শায়িত হলেন পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম একুশে পদকপ্রাপ্ত গবেষক ও সাহিত্যিক মংছেনচীং মংছিন। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়িতে পারিবারিক শ্মশানে তাঁকে শায়িত করা হয়। এ সময় তাঁর পরিবারের লোকজনসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন গুণগ্রাহীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকাল থেকেই প্রয়াত এই কৃতী ব্যক্তির মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান আত্মীয়-স্বজন, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্নস্তরের মানুষ।

মংছেনচীং ২০১৬ সালে ২০ ফেব্রুয়ারি গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক পান। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের মধ্যে তিনিই প্রথম এ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। ১৯৬১ সালের ১৬ জুলাই কক্সবাজার জেলায় রাখাইন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিলো ৫৮ বছর। শৈশব থেকে লেখালেখির প্রতি বিশেষ জোঁক ছিল তার। সেখান থেকেই শুরু। ১৯ বছর বয়সে ১৯৮০ সালে প্রকাশিত হয় মংছেনচীংয়ের প্রথম বই কক্সবাজার রাখাইন ছাত্র সমাজ। এর পর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একে একে লিখে গেছেন বহু বই। মংছেনচীংয়ের মূল বিষয় ছিল রাখাইন জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি, ঐতিহ্য নিয়ে। কখনোবা উঠে এসেছে দেশে বসবাসরত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জীবনমান নিয়ে।

মংছেনচীং কক্সবাজার কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর বাইবেল বিষয়ে ডিপ্লোমা পাস করেন। পেশায় সাংবাদিক মংছেনচীং পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে বসবাস করতেন। মৃত্যুর সময় তিনি স্ত্রী ও দুই কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্খী রেখে গেছেন। তাঁর স্ত্রী শোভারাণী ত্রিপুরাও একাধারে শিক্ষিকা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৭ সালে বেগম রোকেয়া পুরষ্কার প্রাপ্ত হন।

উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাঙামাটি শহরের তবলছড়ি মাঝেরবস্তিতে নিজ মেয়ের ভাড়া বাসায় সকাল ১১টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুরপর তাকে মহালছড়ি নিজ বাড়িতে আনা হয়। তিনি ফুসফুসের রোগসহ বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিলেন।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!