চিকিৎসা না দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ‘হত্যা’র বিচার দাবি ছাত্রলীগের

তিন হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাওয়া চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগ নেতা শফিউল আলম ছগিরের মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে বিচারের দাবি তুলেছে বায়োজিদ থানা ছাত্রলীগ।

শুক্রবার (১২ জুন) বিকেল ৩ টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে বায়োজিদ থানা ছাত্রলীগের উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এই দাবি তুলেন ছাত্রলীগ নেতারা।

তারা বলেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনটি হাসপাতালে ঘুরেও কোন চিকিৎসা পাননি বায়োজিদ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম ছগির। হাসপাতালগুলোর উদাসীন ও দায়িত্বজ্ঞানহীন ভূমিকা তাকে নির্মম মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। যে সময়ে তার চিকিৎসা দরকার ছিল তখন তাকে হাসপাতালে ভর্তি না নিয়ে সময়ক্ষেপণ করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এটি কোনো স্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা নয়। সম্মিলিতভাবে চিকিৎসাহীনভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে আয়োজিত ছাত্রলীগের মানববন্ধনের ব্যানারে লেখা ছিল, ‘মৃত্যু নয়, হত্যার বিচারের দাবিতে এসেছি’

ওমর গণি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মামুন ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে মরহুম ছগিরের পরিবারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন তার ভাগ্নে এসএম রোকন। এ সময় তিনি ‘হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর ছগিরের সাথে ঘটে যাওয়া নির্মমতার কথা তুলে ধরে এর বিচার দাবি করেন।’

ওমর গনি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের আরেক সহ-সভাপতি ফয়াসাল আহমেদের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক এম হাসান আলী, নগর ছাত্রলীগের সদস্য সালাউদ্দিন বাবু, এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদুল ইসলাম সুমন, বায়েজিদ থানা ছাত্রলীগ নেতা সুজন গাজী, মো মাসুম, মো. সওকত, আহমেদ রাব্বি, সরোয়ার আরফান, ইফতেখার প্রভাত, সুলতান মুহাম্মদ জুনায়েদ, সাব্বির হোসেন প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৯ জুন) দুপুর ১১টায় বুকে ব্যথা শুরু হয় চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম ছগিরের। বুকে ব্যথা ওঠার পরপরই তাকে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাকে ভর্তি করা হয় নি। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় জিইসি এলাকার বেসরকারি মেডিকেল সেন্টারে। সেখান থেকেও তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর গেলেন পাঁচলাইশের পার্কভিউ হাসপাতালে। সেখানে যথারীতি তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হল। এরপর বিভিন্নভাবে তদবির করে তাকে যখন পার্কভিউতেই ভর্তি করানো হয়, সময় তখন বেশি ছিল না। ২ টা ৩০ মিনিটের দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।

এমন মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনও। মঙ্গলবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মেয়র আ জ ম নাছির বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে আমাদের থানা আওয়ামী লীগের এক সেক্রেটারি স্ট্রোক করেছিলেন। তাকে তিন-চারটা হাসপাতালে নেওয়া হলেও কোনো হাসপাতালেই সিট খালি নেই— এমন অজুহাতে ভর্তি করায় নি। পরে যখন পার্কভিউ হাসপাতালে নেওয়া হলো তখন চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন তিনি আর বেঁচে নেই।’

‘সঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে তিনি বেঁচে থাকতেন। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর এ ধরনের অমানবিকতা সহ্য করা হবে না’— এমন মন্তব্য করেছেন সিটি মেয়র।

এআরটি/এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!