চালের পর এবার চিড়া, ১৪০০ টাকার বস্তা এখন ২০০০

করোনাভাইরাস আতঙ্কের জের ধরে চালের পর এবার অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেল চিড়ার দাম। চট্টগ্রামে মাত্র একদিনেই বস্তাপ্রতি সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে চিড়ার দাম। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ পাইকারী ব্যবসায়ী সমিতির দাবি, সরকারি ও বেসরকারিভাবে ২ বছরের চিড়াসহ অন্যান্য খাদ্য মজুদ আছে। ফলে চিড়া বা অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়ার কোন কারণ নেই।

চট্টগ্রামের অন্যতম পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জসহ বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চালের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চিড়ার দাম। দুইদিনের ব্যবধানে চিড়ার দাম কেজিপ্রতি ১২ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। অন্যদিকে বস্তাপ্রতি সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা দাম বেড়েছে।

গত সোমবারও (১৬ মার্চ) চিড়ার বস্তা ছিল ১৪০০ টাকা। বুধবারেই সেটা ৫০০ টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ১৯০০ টাকা। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) চিড়ার দাম আরও ১০০ টাকা বেড়ে বস্তাপ্রতি ২০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চকবাজারের পাইকারী ব্যবসায়ী সাইদ আহমেদ বলেন, ‘করোনা আতঙ্কের কারণে তুলনামূলকভাবে মানুষ জিনিসপত্র বেশি কিনছে। যার ফলে কিছুটা দাম বেড়েছে। চাল আর চিড়ার দাম অনেক বেশি বেড়ে গেছে। ধান সংকটের কারণে কল মালিকেরা চিড়া আর চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে আমাদের।’

নাঈম নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘পেটের সমস্যার জন্য প্রতিদিন চিড়া কিনতে হয়। কয়েকদিন আগেও চিড়ার দাম ছিল ৩০ টাকা। দুইদিনের ব্যবধানে চিড়ার দাম ১২ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। তাছাড়া অন্যান্য জিনিসপত্রেরও দামও বেড়েছে।’

খুচরা দোকানি আলাউদ্দিন জানান, ‘করোনার প্রভাবে চালের সাথে সাথে দুইদিনের ব্যবধানে চিড়ার দামও বেড়েছে কয়েক গুণ। খুচরা বাজারে কেজি প্রতি ১২ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে চিড়ার। করোনা আতঙ্ক এইভাবে ছড়াতে থাকলে রমজান মাসে আরো কয়েক ধাপ বাড়তে পারে চিড়াসহ ভোগ্যপণ্যের দাম।’

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ পাইকারী ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি সোলাইমান বাদশা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ধান সংকটের কারণ দেখিয়ে কল মালিকরা চালের দাম বাড়ানোর সাথে সাথে চিড়ার দামও বস্তাপ্রতি ৬০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। গতকাল কেজিপ্রতি ১২ টাকা বেড়ে ৩০ টাকার চিড়া ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘একসাথে বেশি পণ্য কেনার কারণে চাহিদা বেড়েছে। সেজন্য তুলনামূলকভাবে দামও কিছুটা বেড়েছে। যেখানে ১ কেজি প্রয়োজন, এখন তারা বস্তা কিনে নিচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে বাজারে। তাছাড়া ধানের সংকটের কারণে চিড়ার দামেও প্রভাব পড়েছে।’

চাক্তাই খাতুনগঞ্জ পাইকারী ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সগির আহমদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘চালের বাজারের সাথে সাথে চিড়ার বাজারও অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। বাজারে মনিটরিংয়ের অভাবে বাজারে এই অস্থিরতা বিরাজ করছে। আমরা তো হুজুগে বাঙালি। ঈদের মতো সবাই এক সাথে বাজার করা শুরু করেছে। যার নেগেটিভ প্রভাব বাজারে পড়ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এমনিতে সরকারি বা বেসরকারিভাবে চিড়া বা অন্য পণ্যের কোন কমতি নাই। মনিটরিংয়ের অভাবে বাজার অস্থির রয়েছে। ২ বছরের ওপরে বিভিন্ন খাদ্য মজুদ আছে এবং আরও বিভিন্ন জায়গা থেকে খাদ্য আসছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্য মজুদ রেখে দাম বাড়াচ্ছে। এছাড়া আর কিছুই না।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!