চার মাসের ভাইপোকে অপহরণ করে চট্টগ্রামে বাস হেলপারের কাছে ধরা পড়লো চাচা

শিশু নুরুল কাদের। বয়স মাত্র চার মাস। পারিবারিক শত্রুতার জের ধেরে তাকে অপহরণ করে নিয়ে গেল তারই চাচা। তবে অপহরণ করেও পার পায়নি চাচাসহ তিন অপহরণকারী।

একটি বাসের হেলপার ও যাত্রীদের সহায়তায় রক্ষা পায় অপহৃত শিশু নুরুল কাদের। অপহৃত শিশু ও অপহরণকারীদের তারা তুলে দেয় হয় চট্টগ্রাম নগরীর কর্ণফুলী থানা পুলিশের হাতে।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায়। বুধবার (৩০ মার্চ) দুপুরের দিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা পুলিশ ওই শিশুকে উদ্ধার করে। গ্রেপ্তার করে অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকেও। বুধবার রাতে চকরিয়া থানা পুলিশের একটি টিম চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা থেকে অপহৃত শিশু ও অপহরণকারীদের নিয়ে আসে।

এ ঘটনায় অপহৃত শিশুর মা জোসনা আক্তার বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) দুপুরে চকরিয়া থানায় মামলা দায়ের করে।

মামলার আসামীরা হলেন-চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ডেইঙ্গাকাটা এলাকার আলী হোসেনের ছেলে ও অপহৃত শিশু বড় চাচা মো.আল আমিন (২৬), চট্টগ্রামের পাচঁলাইশ থানার ষোলশহর এলাকার মো. ফারুকের ছেলে মোহাম্মদ আরিফ (২৪) ও নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার দক্ষিণ হাতিয়ার মাগুরাবাজার এলাকার মোজাম্মেলের ছেলে নুরুন্নবী (২৫)।

মামলা বাদি জোসনা আক্তার চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘গত ২৯ মার্চ রাতের খাবার খেয়ে বাড়ির দরজা বন্ধ করে আমি ও আমার শ্বাশুড়ি যার যার রুমে ঘুমিয়ে পড়ি। এসময় আমার চার মাস বয়সি শিশু সন্তান নুরুল কাদেরও ঘুমিয়ে পড়ে। ওইরাতের কোনো একসময় আমার ভাসুর আল আমিনের নেতৃত্বে অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা সুকৌশলে বাড়ির দরজা খুলে আমার শিশু সন্তানকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ভোর রাতের দিকে আমার ঘুম ভেঙ্গে দেখি সন্তান নেই। বাড়ির চারপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করি। কিন্তু কোথাও আমার সন্তানের সন্ধান না পেয়ে প্রতিবেশীদের ঘটনাটি বলি।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরদিন দুপুরের দিকে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পাই আমার সন্তানকে উদ্ধার করেছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা পুলিশ। এসময় অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকেও গ্রেপ্তার করে বলে জানতে পারি। বিষয়টি চকরিয়া থানার ওসিকে অবহিত করি। পরে চকরিয়া থানার পুলিশের একটি টিম কর্ণফুলী থানায় গিয়ে শিশু নুরুল কাদের ও অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকে নিয়ে আসে ‘

যাত্রীবাহী হানিফ পরিবহণের সুপার ভাইজার মো.শফিকুল ইসলাম বাবুল বলেন, ‘হানিফ পরিবহণের একটি বাসে করে একটি শিশুসহ তিনজন চট্টগ্রামে যাচ্ছিল। এসময় শিশুটি প্রচন্ডভাবে কান্নাকাটি করছিল। বিষয়টি গাড়ির যাত্রীদের সন্দেহ হলে আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করি। তখন তিনজনের মধ্য থেকে আল-আমিন বলেন এটা তার সন্তান। শিশুর মা কোথায জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। এতে আমাদের আর সন্দেহের সৃষ্টি হয়। পরে তাদের কর্ণফুলী থানায় নিয়ে যাই। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহৃত শিশুটি আল-আমিনের ছোট ভাইয়ের সন্তান। পারিবারিক শত্রুতার জেরে চারমাস বয়সের ওই শিশুকে অপহরণ করেছে তারা।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘শিশুর আপন বড় চাচা পারিবারিক শত্রুতার জের ধরে চার মাস বয়সী শিশু নুরুল কাদেরকে অপহরণ করে। পরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা পুলিশ বাসের সুপারভাইজার ও যাত্রীদের সহায়তায় ওই শিশুকে উদ্ধার করে এবং অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্য চকরিয়া থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় অপহরণকারী চক্রের মুল হোতা আল আমিনসহ তিনজনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!