চান্দগাঁওয়ে মা-ছেলে খুনের মূল হোতা অস্ত্রমামলায় কারাগারে

চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে মা-ছেলে খুনের এজাহারভুক্ত একমাত্র আসামি মো. ফারুককে অস্ত্র মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

শুক্রবার (২ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শফি উদ্দিনের আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহির হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব অস্ত্র মামলায় আমাদের কাছে ফারুককে হস্তান্তর করে। আমরা শুক্রবার তাকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত ফারুককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এক প্রশ্নের জবাবে ওসি জহির জানান, সামনের সপ্তাহে অস্ত্র মামলায় ফারুকের রিমান্ড আবেদন করা হবে।

প্রসঙ্গত, ২৪ আগস্ট সন্ধ্যায় চান্দগাঁও ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের বিপরীতে রমজান আলী সেরেস্তাদারের বাড়ি এলাকার ভাড়াটিয়া গুলনাহার বেগম ও তার ছেলে রিফাতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট আলামত সংগ্রহ শেষে দেখা যায় গুলনাহার বেগমের পুরো শরীরজুড়ে ধারালো ছুরির ১৮টি আঘাত ছিল। পেটের বামপাশের দুটি আঘাতের স্থানে শরীর থেকে বেরিয়ে আসছিল নাড়িভুঁড়ি। বাকি আঘাতগুলো দুই উরু, তলপেট আর হাতে। মা ও ছেলেকে খুন করে সেই রাতেই ফারুক পালিয়ে গিয়েছিল পাবর্ত্য জেলা খাগড়াছড়িতে। সেখানে গিয়ে ওয়ার্কশপে কাজ নেয়। কয়েকদিন কাজ করার পর খরচের সঙ্গে আয়ের ব্যবধান দেখে পাড়ি জমায় রাজধানী ঢাকায়। ঢাকাতেও তার পুষাচ্ছিল না। ফিরছিলো নিজের জন্মস্থান চট্টগ্রাম। বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৪টায় ফারুক ঢাকা থেকে আকবরশাহ থানার পাক্কার মাথা এলাকায় এসে অবস্থান নিলে র‌্যাবের একটি দল তাকে আটক করে।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক জানায়, ব্যবসা নিয়ে গুলনাহার বেগমের সাথে তার দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। সেই দ্বন্দ্ব থেকেই ফারুক গুলনাহারকে খুন করে। আর নয় বছরের শিশু রিফাত তা দেখে ফেলায় তাকেও খুন করা হয়। খুনে ধারালো ছুরি ব্যবহার করেছিল ফারুক।

ফারুক আরও জানায়, তার সঙ্গে গুলনাহার বেগমের পাতানো ভাই-বোনের সম্পর্ক ছিল। পেশায় ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি ফারুক অবসর সময়ে গুলনাহারের বানানো নাস্তা বিক্রি করতো। লকডাউনের সময়েই একইভাবে বিরিয়ানি বিক্রি করছিল ফারুক। সে বিভিন্ন সময়ে টাকার লেনদেন নিয়ে গুলনাহারকে হত্যার হুমকি দিতো। হুমকিতে ভারতীয় টিভি ক্রাইম সিরিয়ায় সিআইসির স্ট্যাইলে খুন করার হুমকিও দিয়েছিল।

ফারুককে গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে দুই রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল ও একটি ধারালো ছুরি উদ্ধার করে র‌্যাব। তার বিরুদ্ধে র‌্যাব বাদী হয়ে নগরীর আকবর শাহ থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেছে।

গুলনাহার বেগম ও তার সন্তান রিফাত হত্যাকাণ্ড মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এবং চন্দগাঁও থানায় কর্মরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক সজল দাস জানান, চাঞ্চল্যকর এই মামলার তদন্তের জন্য জিজ্ঞাসাবাদের উদ্দেশ্যে চান্দগাঁও থানার পক্ষ থেকেও আদালতে ফারুকের রিমান্ড আবেদন করা হবে।

উল্লেখ্য, ফারুক বহদ্দারহাট খাজারোড় এলাকার সিরাজ কসাইয়ের ছেলে।

এফএম/এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!