চাইলেন প্রতিকার, পেলেন শাস্তি— রেলে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পদোন্নতি
এক উচ্চমান সহকারীর পদোন্নতির বিষয়ে অনিয়ম তদন্তে মন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করার অভিযোগ ওঠেছে রেলওয়ের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। বলা হয়েছে-এ বিষয়ে রেলমন্ত্রী ব্যবস্থা নিতে বললেও সে বিষয়ে কোনও সুরাহা না করে অভিযোগের প্রতিকার চাওয়া উচ্চমান সহকারী মাহমুদাকে বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়েছে। একই সাথে বরখাস্তের আদেশ দেওয়া ট্রেনিং একাডেমির একজনকে পদোন্নতি ও অন্যজনকে সিআরবির রেল ভবনের এজিএম করা হয়েছে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) রেল পরিবহন ও বাণিজ্যিক বিভাগ হালিশহর ট্রেনিং একাডেমির কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ট্রেনিং একাডেমির ৪ কর্মকর্তা বেআইনিভাবে ৮ বছরের জুনিয়র মেহেরুন্নেছাকে পদোন্নতি দিয়ে তা বৈধ করতে মন্ত্রী ও ডিজির তদন্তের চিঠি উপেক্ষা করে শাস্তি দেওয়া হয় উচ্চমান সহকারী মাহমুদাকে।
কক্সবাজারে রেক্টর আনোয়ার হোসেন, আবুল কাসেম ও মেহেরুননেছার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
মেহেরুন্নেছা ৮ বছরের জুনিয়র হওয়া সত্ত্বেও একই পদের মাহমুদা খানমকে ডিঙিয়ে মেহেরুন্নেছাকে পদোন্নতি দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে রেল ভবনের উপপরিচালক সৈয়দ হোসেন ইমাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে মন্ত্রীর সুপারিশকৃত চিঠি ও ডিজির তদন্ত রিপোর্ট সংক্রান্ত চিঠির সত্যতা নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, ৩১ ডিসেম্বর ট্রেনিং অফিসার জোবেদা আক্তারের সাথে ‘অশোভন আচরণের’ অভিযোগে উচ্চমান সহকারী মাহমুদা খানমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
রেকর্ডপত্রে জানা যায়, মাহমুদা খানম ও মেহেরুন নেছা ২০০৪ সালে নিয়োগ পান। মেহেরুননেছার পুলিশ ভেরিফিকেশন নেতিবাচক হওয়ায় ৮ বছর পর ২০১১ সালে যোগদান করেন তিনি। কিন্তু মাহমুদা খানম ৮ বছরের সিনিয়র হওয়া সত্ত্বেও তাকে বঞ্চিত করে জুনিয়র মেহেরুনেছাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী মাহমুদা খানম বলেন, ‘আমার অপরাধ আমি মন্ত্রী ও ডিজি মহোদয়ের কাছে অন্যায়ের তদন্তের আবেদন করি। তারা সেটা আমলে নেওয়ার পর উল্টো প্রক্রিয়া শুরু হয় আমার বিরুদ্ধে।’
এদিকে এ পদোন্নতিতে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের একজন রেক্টর আনোয়ার হোসেন। তিনি অবসরে যাওয়ার কারণে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে অন্যজন সিনিয়র ট্রেনিং অফিসার আবুল কাসেম তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আরেকজন হলেন সিনিয়র ট্রেনিং অফিসার জোবেদা আক্তার।
মাহমুদার অভিযোগ, মেহেরুন্নেছা জুনিয়র হওয়া সত্ত্বেও তার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। আর অন্যদিকে মাহমুদা অভিযোগ করায় তাকে ষড়যন্ত্র করে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রেক্টর সর্দার শাহাদাৎ আলী বলেন, ‘আমি শুনেছি আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে কাগজপত্র এখনও দেখিনি। তাই এই মুহূর্তে কোনও মন্তব্যও করছি না।’
জেএস/এসএ